কোকেন আমদানি মামলার প্রধান আসামি কারাগারে
চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রাম বন্দরে কোকেন আমদানির ঘটনার দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি এবং কোকেন আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খান জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম নুরুল আলম নিপুর আদালতে শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে হাজির করা হয়। আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে, র্যাব তাকে গ্রেফতার করেছে বলে স্বীকার করে। তবে নূর মোহাম্মদকে কখন, কোন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা জানায়নি র্যাব।
এডিসি প্রসিকিউশন মুত্তাকী ইবনু মিনান দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, গ্রেফতারের পর শুক্রবার সন্ধ্যায় নূর মোহাম্মদকে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তিনি আরও জানান, র্যাবের পক্ষ থেকে নূর মোহাম্মদকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করলে আদালত রবিবার শুনানির দিন ধার্য করেন।
গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) দায়ের করা অভিযোগপত্রে এজাহারভুক্ত প্রধান আসামি নূর মোহাম্মদের নাম না থাকায় সেটি আদালত প্রত্যাখ্যান করে। একই সঙ্গে র্যাবকে দিয়ে অধিকতর তদন্ত করার জন্য আদেশ দেওয়া হয়। আদালতের আদেশ পেয়ে মামলাটির তদন্ত শুরু করে র্যাব।
প্রসঙ্গত, সিএমপির (চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ) অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ৬ জুন রাতে কাস্টমস কর্মকর্তারা চট্টগ্রাম বন্দরের একটি কনটেইনার সিলগালা করে রাখে। ওই কনটেইনারে করে তরল কোকেন আনা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। ৮ জুন সেটি খুলে ১০৭টি ড্রামের প্রতিটিতে ১৮৫ কেজি করে সানফ্লাওয়ার তেল পাওয়া যায়। তেলের নমুনা প্রাথমিক পরীক্ষা করে কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া না গেলেও পরে উন্নত ল্যাবে কেমিক্যাল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। ২৭ জুন শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর জানায়, কেমিক্যাল পরীক্ষায় একটি ড্রামে তরল কোকেনের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
২৮ জুন নগরীর বন্দর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওসমান গনি বাদী হয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ১৯ এর ১ (খ) ধারায় জাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ ও সোহেলকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালতের নির্দেশে পরবর্তীতে চোরাচালানের ধারায় আরও একটি মামলা দায়ের হয়।
গত বছরের ২৭ আগস্ট চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম ফরিদ আলমের কাছে পৃথক জবানবন্দিতে গ্রেফতার আসামি গোলাম মোস্তফা সোহেল, মেহেদি আলম ও আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল কোকেন আমদানির বিস্তারিত বর্ণণা দিয়ে বলেন, কোকেনের চালানগুলো তাদের খালাসের দায়িত্ব দিয়েছিলেন লন্ডনে অবস্থানরত বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক বকুল মিয়া ও ফজলু। সানফ্লাওয়ার তেলের সঙ্গে কোকেন পাঠানোর বিষয়টি তারা বকুল মিয়া ও ফজলুর কাছ থেকে জেনেছিলেন। তাদের উপর খালাসের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা শুধু দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছেন। এটি আমদানির সঙ্গে তারা জড়িত নন।
আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এ মামলার প্রধান আসামি নূর মোহাম্মদকে বাদ দিয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছিল। কিন্তু আদালত সেটি গ্রহণ না করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য র্যাবকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
(দ্য রিপোর্ট/এমএআর/এনআই/জানুয়ারি ১৬, ২০১৬)