‘শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় আনতে হবে’
চট্টগ্রাম অফিস : রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে দেশ থেকে দুর্নীতি দমন করা কোনো বিষয় না উল্লেখ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, ‘শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। প্রয়োজনে আইনের সংশোধন করে তাদের বিচার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া যাবে না।’
চট্টগ্রামে রবিবার রাতে ‘স্থানীয় পর্যায়ে দুর্নীতিবিরোধী সামাজিক আন্দোলন : সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ সব কথা বলেন তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘দুর্নীতির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দরিদ্র জনগোষ্ঠী। মানুষের মাথাপিছু আয় ৪.৫ শতাংশ কমে যায়। দেশের চলমান উন্নয়ন ব্যাহত হয়। ব্যাপক ক্ষতি নেমে আসে জনজীবনে।’
নগরীর হোটেল আগ্রাবাদে সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চট্টগ্রাম মহানগর আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন সনাক চট্টগ্রাম মহানগরীর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার দেলোয়ার মজুমার।
অনুষ্ঠানে ড. ইফতেখার আরও বলেন, ‘দুর্নীতি একটি বৈশ্বিক ও আন্তর্জাতিক সমস্যা। এটি বন্ধ করা গেলে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ বাড়বে।’ তবে এটি একটি জটিল কাজ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দুর্নীতিবিরোধী কাজ করতে গিয়ে সরকারের কাছ থেকে নানা সময় হুমকি ও প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছি। তবুও আমাদের কাজ বন্ধ করিনি।’
টিআইবির দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের ফলে আজ দেশের রাজনৈতিক দলগুলো দুর্নীতি প্রতিরোধকে তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে স্থান দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের প্রাথমিক বিজয়।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, ‘দেশের রাজনীতি এখন সুবিধাভোগীদের দখলে। স্বচ্ছ রাজনীতিবিদরা এখন আর রাজনীতিতে স্থান পান না।’
তিনি বলেন, ‘দেশে দুর্নীতি প্রতিরোধে আইনি কাঠামো আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই। নিরপেক্ষভাবে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টি হলেই দুর্নীতি প্রতিরোধ করা অনেকটা সহজ হবে।’
দেশের দুর্নীতি দমন কমিশন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান যখন একজন রাজনৈতিক নেতার মতো বক্তব্য দেন তখন কীভাবে প্রত্যাশা পূরণ হয়?’
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সনাক চট্টগ্রামের উপদেষ্টা বেগম মুশতারি শফি বলেন, ‘সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো আন্তরিক হলেই দুর্নীতি দমন করা সম্ভব হবে। এ জন্য এটিকে সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে হবে।’
এ সময় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সনাক মহানগর কমিটির সদস্য আক্তার গনি চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন ইস্ট ডেলটা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ প্রফেসর সেকান্দর খান, ড. মঞ্জুর আলম, এ্যাডভোকেট রাহেনা বেগম রানু, সাবেক জেলা পিপি আবুল হাসেম, নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারু, নূরজাহান খান, রওশন আরা প্রমুখ।
(দ্য রিপোর্ট/এনডিএস/এনআই/জানুয়ারি ১৮, ২০১৬)