বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমাতে ৪৮০০ কোটি টাকা দিচ্ছে বিশ্ব ব্যাংক
বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমাতে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করছে বিশ্ব ব্যাংক। যার পরিমাণ প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি টাকা (৬০ কোটি মার্কিন ডলার)। অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) বলছে এটি পদ্মা সেতুর পরই একক প্রকল্পে সর্বোচ্চ অর্থায়ন। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমে যাবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা।
এই ঋণ নিয়ে ইতোমধ্যেই আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে বিশ্ব ব্যাংকের বোর্ড সভায় এ ঋণ প্রস্তাবটি অনুমোদন দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আরাস্তু খান বলেন, বর্তমানে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ছে। কিন্তু সে অনুযায়ী সঞ্চালন ও বিতরণ লাইন বাড়ছে না। পুরনো লাইনে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বছর বছর বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ নষ্ট হচ্ছে সিস্টেম লসের কারণে। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়নে এ প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে। এতে বিশ্ব ব্যাংক একক প্রকল্প হিসেবে সর্বোচ্চ অর্থায়ন করছে।
অর্থনেতিক সম্পর্ক বিভাগ সূত্র জানায়, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্ব ব্যাংক দিচ্ছে প্রায় ৪ হাজার ৮০০ কোটি এবং সরকারের নিজস্ব তহবিল ও বিজিসিপির নিজস্ব তহবিল মিলে মোট ১ হাজার ১৪০ কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
বিশ্ব ব্যাংকের দেওয়া মোট ঋণের মধ্যে বিজিসিপি ব্যয় করবে প্রায় ৮৪৮ কোটি টাকা। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ব্যয় করবে প্রায় ৩ হাজার ৮৮০ কোটি এবং বাকি ৭২ কোটি টাকা কারিগরী সহায়তা হিসেবে ব্যয় করা হবে। ২০২০ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়িত হলে বিদ্যুতের সিস্টেম লস কমার পাশাপাশি নতুন গ্রাহকদের কাছে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেওয়া যাবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সহজ শর্তে এ ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এর সুদের হার শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ। ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৪০ বছরে বাংলাদেশকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
সূত্র জানায়, বিশ্ব ব্যাংকের বোর্ডে পাস হওয়ার পাশাপাশি প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন পেলেই ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে।
এর আগে আরও দু’টি বড় প্রকল্পে অর্থায়ন করছে বিশ্ব ব্যাংক। এর একটি হচ্ছে মিউনিসিপ্যাল গভার্ন্যান্স অ্যান্ড সার্ভিসেস। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ২ হাজার ৪৭০ কোটি ৯৩ লাখ ৯২ হাজার টাকা। এর মধ্যে বিশ্ব ব্যাংক দিচ্ছে ১ হাজার ৯৫৩ কোটি ৬৫ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, বাকি ৫১৭ কোটি ২৮ লাখ ৫৬ হাজার টাকা সরকারি তহবিল থেকে ব্যয় করা হবে। সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাংক বোর্ডে এ ঋণ অনুমোদন লাভ করেছে। পাশাপাশি একনেকও অনুমোদন দিয়েছে।
অন্যদিকে এডুকেশন কোয়ালিটি এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট নামের এ প্রকল্পটিতে শুরু থেকেই বিশ্ব ব্যাংক অর্থায়ন করে আসছে। এটির সফল বাস্তবায়নের জন্য অতিরিক্ত প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা (১২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিশ্ব ব্যাংকের সঙ্গে নেগোসিয়েশন অনুষ্ঠিত হয়। সম্প্রতি একনেক এ প্রকল্পটির সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন করেছে।
(দ্য রিপোর্ট/জেজে/এইচএসএম/সা/জানুয়ারি ৩০, ২০১৪)