‘হুমকি নয়; অনুরোধ করেছে ভারত’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : এশিয়া কাপ ও টোয়েন্টি২০ বিশ্বকাপ আয়োজন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল নানা সংশয়। তবে এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি) সভার পর তা কেটে গেছে। সেখানে নির্ধারিত হয়েছে এশিয়া কাপ বাংলাদেশেই হচ্ছে। আর শ্রীলঙ্কা আসার পর এশিয়া কাপ তো বটেই; টোয়েন্টি২০ বিশ্বকাপ আয়োজন নিয় শঙ্কা নেই। শঙ্কার পালে হাওয়া লাগিয়েছে আইসিসির খসড়া প্রস্তাবনাও। বইছিল সমালোচনার ঝড়। সেখানেও কোনো সংশয় নেই বলেই জানিয়েছেন বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তবে মিডিয়ার প্রকাশিত নানা খবরে তিনি উষ্মা প্রকাশ করেছেন। সঙ্গে বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবি সভাপতি সে ব্যাপারে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন।
ভারতীয় একটি পত্রিকা লিখেছে- ‘বাংলাদেশ রাজি হচ্ছে না দেখে স্কাইপেতে শ্রীনিবাসনকে ডেকে আনা হয়। সেখানে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, আপনারা রাজি না হলে আমরা এ বছর বাংলাদেশে টোয়েন্টি২০ বিশ্বকাপে অংশ নেব না। এশিয়া কাপ থেকেও নাম তুলে নেব। দেখি আপনারা কী করেন?’ পত্রিকায় ওই হুমকি-ধামকি প্রকাশের পর বাংলাদশি ক্রিকেট ভক্তরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। উঠেছিল গর্জেও। তবে সেই শঙ্কা দূরে ঠেলে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন বলেছেন, ‘হুমকি নয় অনুরোধ করেছে ভারত। ওই পত্রিকায় যা লিখা হয়েছে তা সত্যি নয়। বরং বাংলাদেশে এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ আয়োজনের ব্যাপারে আমাদের সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে ভারতই। আমি যখন তাদের বলি টেস্ট ক্রিকেট সংস্কারের এ নিয়মটি আমরা মেনে নিলে বাংলাদেশের ক্রিকেটে বড় ক্ষতি হবে। তখন তারা আমার কথায় প্রস্তাবটি স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়।’
আইসিসির গুরুত্বপূর্ণ সভা শেষ করে পাপন ঢাকায় এসেছেন বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায়। সেখানে সাংবাদিকদের কিছু না বলে মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে আইসিসির সভার বিষয়াবলী তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, ‘টেস্ট ক্রিকেটে নিয়ে আমি অনেক দেশের সঙ্গে আলোচনা করেছি। আইসিসিকে জানিয়েছি টেস্ট ক্রিকেট সংস্কারের এ প্রস্তাব মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আমরা সরাসরি আপত্তির কথা জানিয়েছি। দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান- এ বিষয়ে আরও সময় চেয়েছে। যে কারণে দুবাইয়ে আইসিসির সভায় এজেন্ডা থেকে টেস্টকে দ্বি-খণ্ডিত করার প্রস্তাব বাদ দেওয়া হয়।’
খসড়া প্রস্তাবের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘প্রস্তাবটি পাস হতে আইসিসির ১০ সদস্যের মধ্যে ৭ দেশের সমর্থন লাগবে। কিন্তু ইতোমধ্যেই ৪ দেশ সরাসরি এ প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তাই এটা কোনোভাবেই পাস হচ্ছে না।’
এই ঘটনার নাটের গুরু মিডিয়া; তিনি বলেছেন, ‘সাংবাদিকদের কিছু রিপোর্টের কারণে কয়েকটি দেশ আমার সঙ্গে আলোচনা করেনি। মিডিয়াতে আগেই প্রকাশ হয়েছে আমরা এ প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছি। যদিও আমি চেয়েছিলাম আমরা নিরপেক্ষ থেকে সকল দেশের সঙ্গেই এ বিষয়ে আলোচনা করব। কারণ এক পক্ষ নিলে অন্য পক্ষ আমার সঙ্গে আলোচনা করবে না। তাই এ বিষয়টা মিডিয়াতে প্রকাশ করতে চাইনি।’
এক প্রশ্নের জবাবে নাজমুল হাসান পাপন আরও বলেছেন, ‘কিছু ব্যক্তি বাংলাদেশ ক্রিকেট নিয়ে নিয়মিত মিথ্যাচার করে বেড়াচ্ছে। যা ঠিক নয়। তারপরেও আমি ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলয়ার সঙ্গে ক্রিকেট নিয়ে কথা বলেছি। তারা আমাদের সঙ্গে টেস্ট খেলতে চেয়েছে। এমনকি কোনো কোনো দেশ আমাকে বলেছে আপনারাই আগে সময় দেন, আমরা খেলতে যাব।’
আইসিসির সভাপতি নির্বাচন কেমন হবে; সে ব্যাপারে পাপন জানিয়েছেন, ‘ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া ছাড়া অন্য কোনো দেশ থেকে আইসিসির সভাপতি হবে না; সেই সিদ্ধান্তটি বাদ পড়েছে। এমনি টেস্ট ক্রিকেটে ওই ৩ দেশ কখনো নিচে নেমে আসবে না; সেই প্রস্তাবটিও বাদ দেয়া হয়েছে। তবে আইসিসিতে বেশ কিছু পরিবর্তন আসছে। সেগুলো বাস্তবায়ন হলে বাংলাদেশের কোনো ক্ষতি হবে না। আমি সভায় বলেছি আমি কোনো দেশের পক্ষে বা বিপক্ষে নই, আমি বাংলাদেশের পক্ষে।’
২০২০ সাল পর্যন্ত এফটিপি নির্ধারিত হলেও ৮ ফেব্রুয়ারির আইসিসির সভাতে এফটিপি বাড়িয়ে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন বিসিবির সভাপতি। তিনি বলেছেন, ‘২০২০ সালের আগেই অনেক দেশ বাংলাদেশে খেলতে আসবে। বাংলাদেশের সঙ্গে টেস্ট খেলার ব্যপারে ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে কথা হয়েছে। আইসিসির আগামী সভায় এ বিষয়ে কিছু একটা হতে পারে।’ আর সব শেষে একটি ভালো সংবাদ দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি; তা হল, ‘দ্রুত ভেন্যুগুলোর কাজ সম্পাদন করায় আইসিসির সভায় বাংলাদেশের প্রশংসাও করা হয়েছে।’
(দ্য রিপোর্ট/আরআই/এএস/ওআইসি/সা/জানুয়ারি ৩০, ২০১৪)