চট্টগ্রামে ৪ দিন পর চিকিৎসক ধর্মঘট স্থগিত
চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামে চার দিন পর বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসদের ডাকা ধর্মঘট স্থগিত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দিনের উপস্থিতিতে রবিবার দুপুরে ধর্মঘট স্থগিত করার ঘোষণা দেন বিএমএ সভাপতি ডা. মুজিবুল হক খান।
তার আগে বিএমএ নেতা, সাংবাদিক ও ক্ষতিগ্রস্ত রোগীর স্বজনদের সঙ্গে মেয়রের উপস্থিতিতে সমঝোতা বৈঠক হয়। বৈঠকের পর মেয়রের আশ্বাসে চিকিৎসক নেতারা ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে মেয়র বিএমএ নেতৃবৃন্দকে আশ্বাস দেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সৃষ্ট সমস্যার সমাধান করা হবে। এ জন্য জনদুর্ভোগ নিরসনে ধর্মঘট প্রত্যাহারের আহ্বান জানান মেয়র।
শনিবার রাতে সিটি মেয়রের সঙ্গে তার বাসভবনে চট্টগ্রামের সাংবাদিক নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠকে প্রেস ক্লাব সভাপতি কলিম সরোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। রাত ১২টা পর্যন্ত চলা বৈঠকে মেয়র আ জ ম নাসির সাংবাদিক নেতাদের উপস্থিতিতে টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে বিএমএ নেতা এবং ক্ষতিগ্রস্ত রোগীর অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলেন। সে বৈঠকের ধারাবাহিকতায় রবিবার দুপুর ১টায় করপোরেশন ভবনে বিএমএ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মেয়র। এর আগে শনিবার বিকেলে বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের (বিএমএ) নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ এবং সকল বেসরকারি ক্লিনিক ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চলমান ধর্মঘট অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। ২০ জানুয়ারি থেকে বিএমএর ডাকে চট্টগ্রামে চিকিৎসকদের এ ধর্মঘট শুরু হয়।
উল্লেখ্য, গত ৯ জানুয়ারি নগরীর সার্জিস্কোপ হাসপাতালে সন্তান প্রসবের পর চিকিৎসকদের অবহেলায় মৃত্যু হয় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছোট ভাই খাইরুল বশরের মেয়ে মেহেরুন্নেছা রিমার। এ ঘটনায় ডা. মাহবুবুল আলম ও ডা. শামীমা রোজীকে দায়ী করা হয়। এবং ঘটনার পর নগরী সার্জিস্কোপ ক্লিনিকে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয় সেদিন রাতে।
এ ঘটনাসহ অন্য একটি ঘটনায় ১২ জানুয়ারি মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম আদালতে দুটি মামলা মামলা দায়ের করা হয় ৩ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এর মধ্যে একটি মামলা দায়ের করেন নিহত রিমার বাবা মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির ছোট ভাই খাইরুল বশর। এ মামলায় অভিযুক্ত করা হয়— ডা. শামীমা সিদ্দিকা রোজী ও ডা. মাহবুব আলমকে। অপরদিকে অপারেশনের সময় নুরুল আবছার নামে এক কিশোরের পেটে ব্যান্ডেজ রাখার অভিযোগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. রানা চৌধুরীর বিরুদ্ধে একই আদালতে ছেলের অঙ্গহানির অভিযোগ এনে মামলা করেছেন ওই কিশোরের বাবা জেবল হোসেন।
চট্টগ্রাম মহানগর বিচারক মোহাম্মদ ফরিদ আলম মামলা দুটি আমলে নিয়ে পাঁচলাইশ থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেন। দায়েরকৃত দুটি মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আন্দোলনে নামেন চট্টগ্রামের চিকিৎসকরা।
(দ্য রিপোর্ট/এপি/সা/জানুয়ারি ২৪, ২০১৬)