সিদ্দিকা কবীর
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : পুষ্টিবিশেষজ্ঞ, রন্ধনশিল্পী ও শিক্ষাবিদ সিদ্দিকা কবীর ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে রান্নাকে শিল্প হিসেবে পরিচিতিতে তার ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
সিদ্দিকা কবীর ১৯৩৫ সালের ৭ মে পুরানো ঢাকার মকিমবাজারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মৌলভি আহমেদুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক ও পরবর্তীতে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। মা সৈয়দা হাসিনা খাতুন ছিলেন গৃহিনী।
সিদ্দিকা কবীর ইডেন কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে প্রথম বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ফোর্ড ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে ১৯৬৩ সালে খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রি পান সিদ্দিকা কবীর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় সিদ্দিকা কবীর পাকিস্তান রেডিওতে ঘোষিকা হিসেবে খণ্ডকালীন চাকরি করেন। স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর ভিকারুন্নিসা নুন স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে যোগ দেন তিনি। পরে ইডেন কলেজে গণিতের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফিরে তিনি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
১৯৬৫ সালে সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রান্না শেখা শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি পাকিস্তান টেলিভিশনে ‘ঘরে বাইরে’ নামের রান্নার অনুষ্ঠানে উপস্থাপনা শুরু করেন।
১৯৭২ সালের নভেম্বর মাসে ব্যাংকার সৈয়দ আলী কবীরের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সৈয়দ আলী কবীর ২০০০ সালে ইন্তেকাল করেন।
১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত সিদ্দিকা কবীর বাংলাদেশ টেলিভিশনে রান্না বিষয়ক অনুষ্ঠান করেন। টেলিভিশন চ্যানেল এনটিভিতে তার রান্নার রেসিপি নিয়ে নির্মিত হয় সিদ্দিকা কবীরস্ রেসিপি। এই অনুষ্ঠানটি ৯ বছর ধরে ৩০০ পর্বে প্র্রচারিত হয়। এ ছাড়া তিনি কয়েকটি খাদ্য পক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানের পরামর্শক হিসেবে কাজ করেন।
‘রান্না খাদ্য পুষ্টি’ (১৯৭৮) বইটির জন্য ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রিত বইগুলির মধ্যে এখন পর্যন্ত বইটি অন্যতম। ১৯৮৪ সালে ইংরেজি ভাষায় একটি কারি রান্নার বই লেখেন। ১৯৮০ সালে লেখেন পাঠ্যবই ‘খাদ্যপুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থা’- যা স্নাতক পর্যায়ে পড়ানো হয়। এ ছাড়া ১৯৯৭ সালে দৈনিক জনকণ্ঠে ‘রসনা’ নামে কলাম লেখেন, যা পরবর্তীতে ‘খাবার দাবারের কড়চা’ নামে প্রকাশিত হয়।
২০০৩ সালে তিনি জাতীয়ভাবে পুষ্টিবিদ হিসেবে ‘উইমেন অব দ্য ইয়ার’ খ্যাতি লাভ করেন।
(দ্য রিপোর্ট/ডব্লিউএস/জানুয়ারি ৩১, ২০১৪)