চট্টগ্রাম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার খালেদার অবদান
চট্টগ্রাম অফিস : ‘বর্তমান সরকার নয়, চট্টগ্রামের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার প্রকৃতপক্ষে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারেরই অবদান’— এমনটি দাবি করছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির নেতারা।
চট্টগ্রাম ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার উদ্বোধন করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন চট্টগ্রাম আসছেন, তখন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপি নেতাদের দাবি, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার উদ্যোগে ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় চট্টগ্রামে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার নির্মাণ হয়েছে। তিনি যদি বিনামূল্যে জায়গা বরাদ্দের ব্যবস্থা ও উদ্যোগ গ্রহণ না করতেন, তাহলে চট্টগ্রামবাসীর জন্য ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার স্বপ্নই থেকে যেত।’
চট্টগ্রামের বিএনপি নেতারা বলেন, ‘বিএনপি জোট সরকারের সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আন্তরিক প্রচেষ্টায় চট্টগ্রামে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কাজ শুরু হয়েছিল। আর এ বিষয়ে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছিলেন তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।’
‘১৯৯৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া আগ্রাবাদস্থ পিডব্লিউডি’র মাঠটি নামমাত্র ১ টাকা মূল্যে চট্টগ্রাম চেম্বারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের জন্য বরাদ্দ দেন। এরপর তিনি সেটির ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু বরাদ্দ নেওয়ার পর দেখা যায় বরাদ্দকৃত জায়গাটি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের জন্য যথেষ্ট নয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসলে ১৯৯৬ সালে বিষয়টি চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের বোর্ড অব ডাইরেক্টরের একটি প্রতিনিধি দল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে আগের বরাদ্দকৃত জায়গা সংলগ্ন রেলওয়ের জায়গাটি বরাদ্দের জন্য আবেদন জানায়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ন্যায্য মূল্যে রেলওয়ের জায়গাটি ক্রয়ের জন্য চট্টগ্রাম চেন্বার অব কমার্সকে পরামর্শ দেন। বিএনপি নেতাদের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর সেই সিদ্ধান্তের কারণেই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০০১ সালে বিএনপি জোট সরকার ক্ষমতায় এলে ২০০২ সালে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের বোর্ড অব ডাইরেক্টরের একটি প্রতিনিধি দল তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর সহযোগিতায় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাথে দেখা করে রেলওয়ের জায়গাটি ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের জন্য বরাদ্দের অনুরোধ করেন। এর ফলশ্রুতিতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সকে দ্বিতীয়বারের মতো রেলওয়ের জায়গাটিও অতিরিক্ত বরাদ্দের ব্যবস্থা করেন’ বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বরাদ্দকৃত পিডব্লিউডি ও রেলওয়ের জায়গার মাঝে পিডব্লিউডির আরও একটি ছোট জায়গা বেগম খালেদা জিয়া বরাদ্দের ব্যবস্থা করে দেন। এরপর চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স সি ডি এ থেকে ছাড়পত্র নেয়। তারপর সদস্যপদের জন্য নিউইউয়র্কে অবস্থিত ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার বরাবর আবেদন করেন তারা। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার কর্তৃপক্ষ নিয়মানুযায়ী এক কোটি টাকা জমা দিতে বললে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স সেটি কিস্তিতে জমা নেওয়ার আবেদন করেন। এই আবেদনে সাড়া দিয়ে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চার কিস্তির মাধ্যমে টাকা জমা নিতে রাজি হন। তবে এক কিস্তি জমা দেওয়ার পরই ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার সদস্যপদ দিয়ে দেয় তাদের। পরে বাকি তিন কিস্তির মাধ্যমে টাকাগুলো চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স জমা দেন। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কাজ উদ্বোধন করেন। তখন থেকে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের কাজ শুরু হয়।’
বিবৃতিতে যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন- দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি ও চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, উত্তর জেলা বিএনপির আহবায়ক আসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এর সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ সরওয়ার জামাল নিজাম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি সামশুল আলম, সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, সহ-সভাপতি আবু সুফিয়ান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গাজী শাহজাহান জুয়েল, উত্তর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কাজী আবদুল্লাহ আল হাসান।
(দ্য রিপোর্ট/জেএস/এমএআর/এনআই/জানুয়ারি ২৯, ২০১৬)