একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন শনিবার
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন শনিবার। ওইদিন বিকেল ৩টায় এ গ্রন্থমেলার শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাসব্যাপী `অমর একুশে গ্রন্থমেলার ২০১৪’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন একাডেমির সভাপতি প্রফেসর এমেরিটাস আনিসুজ্জামান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। শুভেচ্ছা ও স্বাগত বক্তব্য দেবেন সংস্কৃতি সচিব ড. রণজিৎ কুমার বিশ্বাস ও একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নাটক ব্যতীত সাহিত্যের মননশীল শাখার ৯টি বিষয়ে বাংলা একাডেমী পুরস্কারপ্রাপ্ত মোট ১১ জনের হাতে সম্মাননা ও ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হবে। এ ছাড়াও, ওইদিন ফ্রান্স প্রবাসী ফরাসী নাইট খ্যাত বাংলাদেশের খ্যাতিমান মূকাভিনেতা পার্থ প্রতীম মজুমদারকে ফেলোশিপ প্রদান করা হবে।
শুক্রবার সকালে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে আরো জানানো হয় এবার অমর একুশে গ্রন্থমেলা সদ্য প্রয়াত সাবেক প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানকে উৎসর্গ করা হয়েছে।
১ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে। ছুটির দিন বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা ও একুশে ফেব্রুয়ারি সকাল ৮টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চলবে।
সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন বাংলা একাডেমীর মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান, সচিব মো. আলতাফ হোসেন, পরিচালক শাহিদা খাতুন, জনসংযোগ কর্মকর্তা মুর্শিদুদ্দিন আনোয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে মহাপরিচালক বলেন, ‘অমর একুশে গ্রন্থমেলা’ দেশজ আঙ্গিকে আন্তর্জাতিক মাত্রায় পরিণত করা ও প্রকাশনা শিল্পের উন্নতির লক্ষে পরিসর বৃদ্ধি করা হয়েছে।
একাডেমীর নিজস্ব অর্থায়নে মেলা পরিচালনার ব্যাপারে শামসুজ্জামান খান বলেন, এ মেলা কেবলেই বাঙালির আত্মশুদ্ধি ও মননশীল চেতনার মেলা। তাই এ বছর কোনো কোম্পানির অর্থ সাহায্য নেওয়া হয়নি।
প্রথমবারের মতো মেলার প্রথম দিনে বাংলা একাডেমী পুরস্কার ঘোষণা নিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের সাহিত্যে বিরল দৃষ্টান্ত রাখার জন্য প্রতি বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও বাংলা একাডেমী পদক প্রদান করা হচ্ছে।
প্রতি বছরের ন্যায় গুণগত বিচারে ভালো বই প্রকাশনার জন্য অমর একুশে গ্রন্থমেলার স্বপ্নদ্রষ্টা চিত্তরঞ্জন সাহা পুরস্কার, সর্বাধিক সংখ্যক মানসম্পন্ন বই প্রকাশনার জন্য তিনটি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ‘মুনীর চৌধুরী পুরস্কার’ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এ ছাড়া বিষয়ভিত্তিক সেমিনার ও সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকবে মেলা মঞ্চে।
মেলার আবহ তুলে ধরেন মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ও একাডেমীর পরিচালক শাহিদা খাতুন। তিনি বলেন, ‘গ্রন্থমেলা অনুষ্ঠিত হবে বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণ এবং একাডেমী সম্মুখস্থ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে। গ্রন্থমেলায় মোট ২৯৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৫৩৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অংশে ২৩২টি মূল প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ৪৩২টি ইউনিট, বাংলা একাডেমীর অভ্যন্তরীণ অংশে ২৪টি শিশু-কিশোর প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে ৩৩টি ইউনিট এবং সরকারি প্রতিষ্ঠান-মিডিয়া ও অন্যান্য ৪৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৯টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবার উন্মুক্তসহ ৫৫টি লিটল ম্যাগাজিনকে লিটল ম্যাগাজিন কর্নরে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে। লিটল ম্যাগাজিন কর্নারটি লিটলম্যাগ আন্দোলনের বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব প্রয়াত কবি খোন্দকার আশরাফ হোসেনের নামে নামকরণ করা হয়েছে। ক্ষুদ্র প্রকাশনা সংস্থা এবং ব্যক্তি উদ্যোগে যারা বই প্রকাশ করেছেন তাদের বই বিক্রি/প্রদর্শনের জন্য জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের স্টলে রাখা যাবে। গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমী প্রকাশিত বই ৩০% কমিশনে ও মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ২৫% কমিশনে বিক্রি করবে।
অমর একুশে গ্রন্থমেলা সম্পূর্ণ প্রাঙ্গণকে ভাষাশহীদ চত্বর (সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত ও শফিউর), রবীন্দ্র, নজরুল, আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্, সোমেন চন্দ, রোকেয়া, সুফিয়া কামাল, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত চত্বর এবং একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে স্বীকৃতি লাভের অন্যতম প্রস্তাবক প্রয়াত রফিকুল ইসলাম চত্বরে বিন্যস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া নজরুল মঞ্চের সামনে শিশুকর্নারে থাকবে শিশু-কিশোর বিষয়ক প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। প্রতিবারের মতো এবারেও নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা থাকবে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৪-এর প্রচার কার্যক্রমের জন্য তথ্যকেন্দ্র থাকবে বর্ধমান ভবনের পশ্চিম বেদিতে।’
(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এসবি/এনআই/জানুয়ারি ৩১, ২০১৪)