সাক্ষাৎকারে প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক
সিভিল সার্ভিস আইন করতে পারলে বেশি খুশি হব
ইসমাত আরা সাদেক যশোর-৬ (কেশবপুর) নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১২ জানুয়ারি নতুন সরকার গঠিত হলে তাকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। পরে ১৫ জানুয়ারি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ইসমাত আরার মরহুম স্বামী এ এস এইচ কে সাদেক ছিলেন আমলা ও মন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার একান্ত সাক্ষাৎকারে দ্য রিপোর্টের মুখোমুখি হন তিনি। জনপ্রশাসন নিয়ে এখনই গভীরভাবে কিছু বলতে চাননি, মন্ত্রণালয়ের বিষয়গুলো আত্মস্থ করার দিকেই এ মুহূর্তে মনোযোগ বেশি তার।
জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী হিসেবে কাজ করার অনুভূতি কেমন?
জনপ্রশাসন বিষয়টি আমার কাছে নতুন নয়। এ বিষয়ে আমার ধারণা আছে। কারণ আমার স্বামী সরকারি চাকরি করতেন।
যোগ দেওয়ার পর অফিসে বসেছি ৭ থেকে ৮ দিনের মতো। এত বড় একটা মন্ত্রণালয়ের সবকিছু জানতে গেলে, বুঝতে গেলে আমাকে কয়েক মাস সময় দিতে হবে। প্রথমে একটু চিন্তিত হয়েছিলাম। এত বিশাল মন্ত্রণালয়, এত বিশা্ল দায়িত্ব, কীভাবে কী করবো, কিন্তু যখন যোগ দিলাম সবাই আমাকে সহযোগিতা করছেন। আমার বুঝতে, জানতে সহজ হচ্ছে। এটা আমার প্লাস পয়েন্ট।
আপনার স্বামী সরকারি চাকরি, মন্ত্রিত্ব করার কারণে পরিবারে প্রশাসনের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার সুযোগ ছিল…
প্রশাসন নিয়ে ধারণা ছিল। আমার এ বিষয়ে আগ্রহও ছিল। কি হচ্ছে না হচ্ছে জানতে চাইতাম। আমার স্বামী আবার খুব স্ট্রিক্ট ছিলেন। তিনি সার্ভিস রুলের বাইরে যেতেন না। কনফিডেনশিয়াল (গোপনীয়) ফাইল কিংবা অফিসিয়াল ম্যাটার নিয়ে কখনও আলোচনা করতেন না। তাই ওগুলো আমি জানতাম না। তবে প্রশাসন কীভাবে চলে সেই প্রক্রিয়াটি জানতাম। আমার স্বামী সচিব হিসেবে সংস্থাপনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে ছিলেন।
প্রশাসনের কোন কোন বিষয়গুলোতে অগ্রাধিকার দেবেন?
আগে সবকিছু বুঝব তারপর চিন্তা করব কোনটাকে অগ্রাধিকার দেব। এখন রুটিন কাজগুলো চালিয়ে যাচ্ছি সেখানে প্রাইয়োরিটি চুজ করার সময় এখনও আসেনি।
আমার কিছু পরিকল্পনা রয়েছে, আপনারা এটা জানেন। জনপ্রশাসনকে এগিয়ে নিতে আন্তরিকতা, চেষ্টা কিংবা ইচ্ছা কোনটারই ঘাটতি থাকবে না।
জনপ্রশাসনে বদলি, পদোন্নতি, ওএসডি নিয়ে নানা সমস্যা রয়েছে…
হ্যাঁ, এখানে সমস্যা রয়েছে। প্রথম থেকেই এ সব সমস্যা শুনছি। অতিরিক্ত সচিব হয়েছেন, কেন তাদের সচিব করা হয়নি। ৫ বছর ধরে ওএসডি আছেন। কেন তাকে পোস্টিং দেওয়া হয়নি। এগুলোর কারণ আমাকে জানতে হবে। নিশ্চয়ই কোনো না কোনো কারণ আছে। এগুলো কীভাবে সমাধান করা যায় সেই চেষ্টা করব।
গত সরকারের সময় কয়েকবার সিভিল সার্ভিস আইনের খসড়া করা হলেও তা চূড়ান্ত হয়নি...
শেষ খসড়াটা কোন কারণে চূড়ান্ত হয়নি। এর কারণগুলো খুঁজে বের করতে হবে। আইনটি এক দিনে হবে না। আমি চেষ্টা করব। এ সরকারের ৫ বছরের মধ্যে আইনটি করতে পারলে আমি সবচেয়ে বেশি খুশি হব। সরকারি সার্ভিস যারা করেন তারা একটি আইনের মধ্যে গেলে তারাও স্বস্তি পাবেন, যে সরকারই থাকুক তাদের উপর আন্দোলনের চাপও কমবে।
আইনের মাধ্যমে রাজনীতিকীকরণও নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব…
হ্যাঁ, প্রশাসনে এটা না থাকলেই ভালো।
জনপ্রশাসনে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিশেষ অবদানের জন্য সিভিল সার্ভিস পদক নীতিমালাও চূড়ান্ত করতে পারেনি গত সরকার।
এটাও আমাকে জানতে হবে। অনেক কিছুই বিস্তারিত জানতে হবে। এরপর এ বিষয়ে উদ্যোগ নেব।
ইসমাত আরার বিষয়ে আরও কিছু তথ্য
ইসমাত আরা সাদেক ১৯৪২ সালের ১২ ডিসেম্বর বগুড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা মরহুম মাহবুবুর রহমান চৌধুরী ও মা সাহেরা খাতুন। তিনি এক ছেলে ও এক মেয়ে সন্তানের জননী। ইসমাত আরা ১৯৫৬ সালে বগুড়া ভিএম গার্লস স্কুল থেকে ম্যাট্রিক, ১৯৫৮ সালে ঢাকার হলিক্রস কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট ও ১৯৬০ সালে ঢাকার ইডেন কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরএমএম/এইচএসএম/এএইচ/এনআই/জানুয়ারি ৩১, ২০১৪)