ফ্রি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন
কাওসার আজম ও শামীম রিজভী, ইজতেমা ময়দান থেকে : টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বিশ্ব ইজতেমায় আসা মুসল্লিদের ফ্রি চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে ৪০টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা। স্টেশন রোড-কামারপাড়া সড়কের ইজতেমা ময়দানের উত্তর পাশে স্থাপিত ফ্রি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রে দূর-দূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিদের জন্য এ সেবা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ফ্রি চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন সেখান থেকে। এ সব চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রে চিকিৎসকের পরামর্শপত্রসহ বিনামূল্যে ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি টঙ্গী সরকারি হাসপাতালেও রয়েছে বিশেষ মেডিকেল টিমের ব্যবস্থা। রয়েছে বিশেষ অ্যাম্বুলেন্সও।
গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণকক্ষ সূত্রে এ সব তথ্য জানা যায়।
দুই পর্বের ইজতেমার শুরুর দিন ২৪ জানুয়ারি থেকেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ফ্রি চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ সরবরাহ করে আসছে।
সরেজমিনে শুক্রবার বিকেলে ফ্রি চিকিৎসা কেন্দ্রে দেখা যায়, হাজার হাজার মানুষ সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা সেবা ও ওষুধ নিচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের চিকিৎসা কেন্দ্রের সামনে চিকিৎসা নিতে চুয়াডাঙ্গা থেকে ইজতেমায় আসা ষাটোর্ধ্ব আব্দুল লতিফ জানান, ‘শুক্রবার সকালে হঠাৎ করে পেটের পীড়া দেখা দেওয়ায় তিনি এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছেন।
হামদর্দ ফ্রি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রের সামনের লাইনে দাঁড়ানো আব্দুল্লাহ আল মাসুম বলেন, ‘প্রথম পর্বের ইজতেমার মোনাজাতের দিন এসেছি। পরশু দিন থেকে ঠাণ্ডা লেগেছে। শুক্রবার সকালে বেশি, তাই লাইনে দাঁড়িয়েছি।
হামদর্দের মেডিকেল টিমের সদস্য সচিব মনিরুজ্জমান খান বলেন, ‘হামদর্দের অধীনে ৫টি অঙ্গ সংগঠন ফ্রি চিকিসা সেবা দিচ্ছে। বেশির ভাগই হারবাল ওষুধ দেওয়া হচ্ছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীন গাজীপুর সিভিল সার্জনের তত্ত্বাবধানে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে কর্মরত ডা. রফিকুল হাসান জানান, ‘শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত চার শ’ জনের মতো চিকিৎসা নিয়েছেন। এদের অধিকাংশই আসছে মাথাব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও ঠাণ্ডা জনিত রোগ নিয়ে’।
ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যাল ও হারবালের সৌজন্যে স্থাপিত ফ্রি চিকিৎসা সেবা কেন্দ্রে ইজতেমায় ফার্মাসিউটিক্যাল বিভাগে ৫ হাজার জনকে সেবা দেওয়া হয়েছে। আর হারবাল বিভাগ থেকে এক হাজার ৮ শ’ জনকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ফার্মাসিউটিক্যাল থেকে ৯শ’ জনকে ও হারবাল থেকে ৫শ’ জনকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। ইবনে সিনা ফ্রি মেডিকেল সেন্টারের ইনচার্জ আমিনুল হক বলেন, ‘মূলত আলসার, শরীর, মাথা ও পেট ব্যথা এবং ডিহাইড্রেশন, পাতলা পায়খানা রোগের রুগীরা আসছেন। তবে চর্মজনিত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।
টঙ্গী ওষুধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির নেতা নাসির উদ্দিন বুলবুল বলেন, ‘শুক্রবার আছর নামাজ পর্যন্ত ৪৫০ জনকে ফ্রি চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাস জনিত রোগীর সংখ্যাই বেশি।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এর সৌজন্যে স্থাপিত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে দায়িত্বরত আরিফ আমিন বলেন, ‘শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৮শ’র মতো মানুষকে সেবা দেওয়া হয়েছে।
ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে দায়িত্বরত বেশ কয়েকজন বলেন, ‘ইজতেমায় আগত মুসল্লি ছাড়াও স্থানীয় বস্তি ও শ্রমিক শ্রেণির লোকজন ফ্রি চিকিৎসা সেবা নিতে ভিড় করছেন।
(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এসআর/এসবি/এনআই/জানুয়ারি ৩১, ২০১৪)