হতাশাই আলোর ‘বাতিঘর’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : হতাশার মেঘকালো অন্ধকার ধেয়ে এসেছিল ঢাকা টেস্টে। এক কথায়, পুরো ম্যাচেই বাংলাদেশ চাপ অনুভব করেছে। হয়তো আইসিসির নতুন প্রস্তাবনার কথা ভাবতে গিয়েই বাংলাদেশ হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে। বোলিং-ব্যাটিং-ফিল্ডিং ৩ বিভাগেই ব্যর্থ হয়েছেন মুশফিকরা। এমন হারে মুশফিক নিজেও হতাশ। কারণ সর্বশেষ ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছে বাংলাদেশ। প্রায় ৩ বছর পর ফের ইনিংস হারের বেদনা; খুব বিষণ্ন করেছে অধিনায়ক মুশফিককে। মানতেই পারছেন না। ঢাকা টেস্ট থেকে কী পেয়েছেন; তা ইনিয়ে-বিনিয়ে বলেছেন ম্যাচের চতুর্থ দিন। সঙ্গে ‘নিজেদের শুধরে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।’ ঢাকা টেস্ট ভুলে চট্টগ্রামে ভালো করার ভিত রচনা করার অঙ্গীকার ছিল মুশফিকের উচ্চারণে। সেখানে হতাশা সরিয়ে অনেকে আলোর বাতিঘর দেখছেন।
ঢাকা টেস্টের অফিসিয়াল সংবাদ সম্মেলনে মুশফিক বলেছেন, ‘আমাদের সমস্যাগুলো আমরা সমাধান করে তা প্রয়োগ করতে পারছি না। এমন না যে আমরা চেষ্টা করছি না; আসলে আমাদের ভাগ্য সব সময় ফেভার করছে না।’ ভালো প্রস্তুতির পরও ইনিংস এবং ২৪৮ রানে হেরেছি। পিচ নিয়ে বাংলাদেশ কোনো প্রতিনিধিই নেতিবাচক মন্তব্য করেননি। প্রথম ইনিংসে ব্যাটিং লাইনআপ ধসে পড়ার পর সবাই ভেবেছে দ্বিতীয় ইনিংস ওমন হবে না। কিন্তু কিসের কি! বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা যেনো ওয়ানডে খেলায় মেতে ওঠেছে। জাতীয় দলের ড্যাশিং ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ২ ইনিংসে যেভাবে আউট হয়েছেন, তা কোনো দায়িত্বশীল ক্রিকেটারের কাছে আশা করা যায় না। অভিজ্ঞ এ ক্রিকেটারের মতো করে যেনো সবাই ঢাকা টেস্ট নিয়ে ছেলে খেলায় মেতে ওঠেছে। সঙ্গে ‘যথার্থই’ আম্পায়ারিং হয়েছে। সবমিলে ঢাকা টেস্ট মুশফিকদের জন্য এক হতাশাময় টেস্ট হয়ে দাঁড়িয়েছে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মুমিনুল-সোহাগ গাজীরা যেভাবে নিজেদের উজাড় করে খেলেছেন; ঢাকা টেস্টে তার ছিটেফোঁটাও ছিল না। এমন আকস্মিক ব্যর্থতা কেউই মেনে নিতে পারছে না। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন ৩ পেসার খেলানোর যৈাক্তিকতা নিয়ে। ৩ পেসার তত্ত্বের ব্যাখ্যায় মুশফিক জানিয়েছেন, ‘টস একটা ফ্যাক্টর ছিল। টসে জিতলে প্রথমে বোলিং করার সুযোগ পেলেও হয়তো প্রথম সেশনটা ওদের কাজে লাগাতে পারতাম।’
মুশফিক হতাশার কথা বাদ দিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টেই মনোযোগ দিতে চান। কিন্তু এত সব ব্যর্থতার মধ্যে চট্টগ্রামের লাকি গ্রাউন্ডে কতটুকু ঘুড়ে দাঁড়াতে পারবে বাংলাদেশ; থাকছে সেই প্রশ্ন! ঢাকা টেস্টে শুধু ব্যাটিং নয়; যেভাবে ক্যাচ মিসের মহড়ার সঙ্গে বোলাররাও ছিলেন প্রাদপ্রদীপের তলানীতে। শ্রীলঙ্কা এক ইনিংসেই খেলেছে ১৮৭.৫ ওভার। অন্যদিকে বাংলাদেশ ২ ইনিংস মিলে ব্যাটিং করেছে ১১৫.৪ ওভার। এমন দৈন্যদশা ব্যাটিং-ফিল্ডিং-বোলিং নিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ঘুড়ে দাঁড়াবে এমন প্রত্যাশা ক্রিকেটপ্রেমীদের।
(দ্য রিপোর্ট/আরআই/এএস/সিজি/আরকে/জানুয়ারি ৩১, ২০১৪)