চট্টগ্রাম অফিস : সুলতানা ভ্যান ডি লিস্ট (৪০) নামে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এক নেদারল্যান্ড নাগরিক স্বজনদের খোঁজে দীর্ঘ ৩৭ বছর পর মাতৃভূমিতে ফিরে এসেছেন।

১ ফেব্রুয়ারি পূর্বপুরুষের সন্ধানে স্বামী ইউবি জ্যাকব ও সন্তান নোয়া আবেদ নাবিলা জ্যাকবকে নিয়ে বাংলাদেশে আসেন সুলতানা।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে স্বজনদের খুঁজে পেতে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চান তিনি। এ সময় স্বামী ও সন্তান তার পাশে উপস্থিত ছিলেন।

সুলতানা সাংবাদিকদের জানান, চট্টগ্রামের দোহাজারীতে তার বাড়ি। ৩৭ বছর আগে মা-বাবা মারা যাওয়ার পর তিনি মাত্র মাত্র ৫ বছর বয়সে দেশান্তরিত হন। সুলতানাকে দত্তক নিয়ে গিয়েছিলেন নেদারল্যান্ডসের একটি পরিবার।

তিনি জানান, নেদারল্যান্ডে স্বামী সংসার নিয়ে সুখে থাকলেও তার মন কাঁদতো জন্মস্থান বাংলাদেশের জন্য। তিনি তার বাড়ি দোহাজারী এলাকায় জানালেও বাবা-মার নাম আত্মীয়-স্বজন কিংবা গ্রামের ঠিকানাও জানেন না।

সুলতানা বলেন, ‘ছোটবেলার কোনো স্মৃতি আমার মনে নেই। কেবল দোহাজারী রেলস্টেশন ও বাজারের কথা মনে আছে। আমার বাবা-মা কে তাও জানি না। কিন্তু স্বজনদের ফিরে পাওয়ার প্রবল টানে বাংলাদেশে এসেছি। তাদের খুঁজে বের করবো।’

জন্মভূমিতে ফেরার প্রবল ইচ্ছা থাকলেও যোগাযোগের কোনো মাধ্যম পাচ্ছিলেন না সুলতানা। পরে নেদারল্যান্ড ভিত্তিক এনজিও সংস্থা স্লোভের মাধ্যমে বাংলাদেশ আসেন। সংগঠনের সাবেক এক কর্মকর্তার সহযোগিতায় চট্টগ্রাম এসেছেন। তারা প্রশাসন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে স্বজনদের খুঁজে বের করার দায়িত্ব পালন করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে এনজিও সংস্থা স্লোভের কর্মকর্তা ইসমাইল শরীফ সাংবাদিকদের বলেন, সুলতানার জন্ম ১৯৭৫ সালে তৎকালীন পটিয়া পৌরসভা মহকুমার বর্তমানে চন্দনাইশ উপজেলার দোহাজারী গ্রামে। বাবা-মা মারা যাওয়ার পর দাদি রহিমা খাতুন ডাচ দম্পতির কাছে সুলতানাকে তুলে দেন। তারপর সেখানেই বেড়ে ওঠেন। সুলতানার দত্তক বাবা-মা’র কাছে থাকা অ্যাফিডেভিট থেকে জানা যায়, রহিমা খাতুন দোহাজারী এলাকার মৃত কদম আলীর স্ত্রী। সুলতানার জন্মের পর তার মা-বাবা মারা গেলে অভিভাবক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন রহিমা খাতুন। কিন্তু ভরণ-পোষণের সামর্থ্য না থাকায় একটি ডাচ পরিবারের কাছে তাকে দত্তক দেন। তবে ওই অ্যাফিডেভিটে সুলতানার মা-বাবার নাম উল্লেখ নেই।

(দ্য রিপোর্ট/এসবি/এমএআর/এনআই/ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৬)