ময়দানে বাহারি ব্যবসা
কাওসার আজম, ইজতেমা ময়দান থেকে : টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমাকে কেন্দ্র করে অভিনব সব ব্যবসা খুলে বসেছেন স্থানীয়রা। পাশাপাশি হকার ও মৌসুমি ব্যবসায়ীদেরও জমজমাট ব্যবসা চলছে। ইজতেমার ভেতর ও বাইরে এ সব ব্যবসা এখন জমজমাট। সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন ইজতেমায় আসা লাখো মানুষ।
তাবিজ-কবজের পসরা : ইজতেমা ময়দানের বাইরে কম সুযোগ পেলেও ভেতরে কথিত অসংখ্য কবিরাজ ও হকার তাবিজ-কবজের ব্যবসা খুলে বসেছেন। তারা গ্যারান্টি সহকারে সর্বরোগের ওষুধ, গাছ-গাছালি ও তাবিজ-কবজ বিক্রি করছেন। এ সব দোকানে ভিড় করছেন আগত মুসল্লিরা। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ইজতেমার শামিয়ানার রাস্তা থেকে হকারদের তুলে দিলেও ভেতরে দিব্বি ব্যবসা করছেন তারা।
জমে উঠেছে গোশত ও খড়ির দোকান : ইজতেমার ভেতরে স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠেছে গোশতের দোকান। এছাড়াও পাওয়া যাচ্ছে ব্রয়লার ও দেশি মুরগিও। হাতের নাগালে এসব পাওয়া যাওয়ায় মুসল্লিদের আর বাইরে যেতে হচ্ছে না। এসব দোকান থেকে গরুর গোশত, খাসির গোশত বা মুরগির গোশত নিয়ে রান্না-বান্না করছেন। আর মুসল্লিদের রান্না-বান্নার জন্য হাতের নাগালেই পাওয়া যাচ্ছে কাঠের শুকনা খড়ি।
অভিনব চার্জারের ব্যবসা : ইজতেমায় আসা লাখ লাখ মুসল্লি মোবাইলে চার্জ দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। এ অবস্থায় ইজতেমার ভেতরে ও বাইরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অভিনব চার্জারের দোকান। কাঠের টুকরার সঙ্গে সকেট লাগিয়ে একই সঙ্গে শতাধিক মোবাইলে চার্জ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জমজমাট এ ব্যবসাটি করছেন স্থানীয়রা।
অজুর পানি ৫ টাকায় : বিপুলসংখ্যক মুসল্লির অজু ও গোসলের ব্যবস্থা করেছে ইজতেমা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এতেও সঙ্কুলান হচ্ছে না। তাই ইজতেমার বাইরের রাস্তার ধারে কিংবা কোনো সরকারি খাস জায়গায় ঢালাওভাবে ব্যবসা করছেন বস্তিবাসীসহ স্থানীয়রা। বড় বড় ড্রামে করে পানি ভরে শতাধিক বদনা নিয়ে বসে আছেন তারা। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আগতরা এ সব জায়গায় অজু সারছেন। বিনিময়ে দিতে হচ্ছে ৫ টাকা করে।
পয়:নিষ্কাশনেও টাকা গুনতে হচ্ছে : মুসল্লিদের সুবিধার্থে ইজতেমার ভেতরে ১৬ হাজারের মতো টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু এতসংখ্যক মানুষের সঙ্কুলান হচ্ছে না। তাই ইজতেমার বাইরে গড়ে উঠেছে অসংখ্য অস্থায়ী টয়লেট। এ সব টয়লেটে প্রস্রাব করতে ৫ টাকা এবং পায়খানা করতে নেয়া হচ্ছে ১০-১৫ টাকা।
গরম কাপড় ও তসবিহ টুপির দোকানেও ভিড় : প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে মুসল্লিরা দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় শরিক হয়েছেন। অনেকে সঙ্গে গরম কাপড় এনেছেন, অনেকে আবার হালকা কাপড়েই এসেছেন। শীতের তীব্রতা বাড়ার ফলে গরম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। ইজতেমার বাইরে ও ভেতরে বসেছে অসংখ্য গরম কাপড়ের দোকান। কম্বল, জ্যাকেট, কানটুপিসহ সব ধরনের গরমের কাপড় বিক্রি হচ্ছে দোকানগুলোতে। ভিড় রয়েছে তসবিহ, টুপির দোকানগুলোতেও। অনেকেই আবার ফেরি করে এসব ব্যবসা করছেন।
ইজতেমা ময়দান ও আশপাশে এ ধরনের অনেক ব্যবসা করছেন হকার ও স্থানীয়রা।
(দ্য রিপোর্ট/কেএ/এমডি/জামান/ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৪)