রেকর্ড গড়ল মরিসে’র আত্মজীবনী
দ্য রিপোর্ট২৪ ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের বাজারে এক সপ্তাহের মধ্যে ৩৫ হাজার কপি বিক্রি হয়ে রেকর্ড গড়ল ইংরেজ গীতিকার ও গায়ক মরিসে’র আত্মজীবনী। দ্রুত বিক্রির দিক থেকে ‘মরিসেস অটোবায়োগ্রাফি’ গায়কদের স্মৃতিকথার আগের সব রেকর্ড ভেঙেছে। প্রথম সপ্তাহ থেকে বইটি ইউকে বেস্টসেলিং বইয়ের তালিকার শীর্ষে আছে।
স্টিভেন প্যাট্রিক মরিসে (জন্ম- ২২ মে ১৯৫৯) ১৯৮০’র দশকে দ্যা স্মিথস ব্যান্ডের গীতিকার ও গায়ক হিসেবে আলাদা বৈশিষ্ট্যের জন্য পরিচিত হয়ে উঠেন। জনপ্রিয়তার তুঙ্গে অবস্থায় যুক্তরাজ্যের এই ব্যান্ডটি ১৯৮৭ সালে ভেঙ্গে যায়। মরিসে এরপর একক ক্যারিয়ারের দিকে ঝুঁকে পড়েন। তার প্রথম অ্যালবাম ভিভা হেইট ১৯৮৮ সালে মুক্তির পরপর ইউকে অ্যালবাম চার্টের এক নাম্বার স্থান দখল করে নেয়। এরপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। একের পর এক গান দিয়ে দখল করে নেন চার্টের শীর্ষস্থান। তার সম্পর্কে দি ইন্ডিপেনডেন্ট পত্রিকায় বলা হয়, বেশির ভাগ পপ গায়কই খ্যাতি আসার আগে মারা যান কিন্তু মরিসে তার জীবদ্দশাই আইকনিক মর্যাদায় পৌঁছে গেছেন।
গায়কদের মধ্যে আত্মজীবনী বিক্রির আগের রেকর্ডটি ছিলো কিথ রিচার্ডের। ২০১০ সালে প্রকাশিত তার লাইফ নামের বইটি প্রথম সপ্তাহে বিক্রি হয় ২৮ হাজার ২১৩ কপি। অন্যদিকে মরিসে’র নতুন বইটি বিক্রি হয়েছে ৩৪ হাজার ৯১৮ কপি।
তবে সবচেয়ে বেশি বিক্রিত স্মৃতিকথার কাছাকাছি যেতে পারেনি মরিসে’র বইটি। এটি হলো কেট ম্যাককেনের মাডেলাইন। মে ২০১১ সালে প্রকাশিত বইটি প্রথম সপ্তাহে বিক্রি হয় ৭২ হাজার ৫০০ কপি। তবে এটি কোন গায়ককে নিয়ে লেখা বই নয়।
চলতি সপ্তাহের ইউকে’র শীর্ষে থাকা অন্য বইগুলো হলো- হেলেন ফিল্ডিংয়ের ম্যাড এবাউট বয়, ডেভিড উয়ালিয়ামসের শিশুতোষ বই ডেমন ডেন্টিস্ট ও অভিনেতা ডেভিড জেসনের স্মৃতিকথা মাই লাইফ।
মরিসে’র বইটি প্রকাশনা সংস্থা পেঙ্গুইনের ক্লাসিক ক্যাটাগরিতে প্রকাশিত হয়েছে। এর মানে বইটি খুব শীঘ্রই পেপারব্যাকে বাজারে আসবে। পেপারব্যাকের দাম কম হওয়ায় প্রকাশক ঐ সংস্করণের সাফল্য আশা করছেন।
বইটি মরিসে’র দেয়া এক রেডিও সাক্ষাৎকারকে ভিত্তি করে রচিত। ২০১১ সালে তিনি রেডিও ফোর-এ ফ্রন্ট রো অনুষ্টানে সাক্ষাৎকারটি দেন। পাঠক চাহিদার কারণে তখন থেকেই এটি ছিল অতিপ্রত্যাশিত একটি আত্মজীবনী। মরিসে’র নিজেও একে পাবলিশিং ইভেন্ট বলে উল্লেখ করেন।
মারিসে’র ক্যারিয়ার কখনো মসৃণ ছিলো না। বির্তক কখনোই তার পিছু ছাড়েনি। তিনি বার বার নানা কারণে সমালোচিত হয়েছেন। বইটিও এর বিপরীত নয়। সমালোচকরা বইটি নিয়ে দুই শিবিরে ভাগ হয়ে পড়েছেন। তার পদ্যের ভঙ্গি ও কৌতুকের জন্য অনেকে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। অন্যদিকে বিপরীত শিবিরের সমালোচকরা বলছেন বইটি অতিশয় বিরক্তিকর।
মরিসে’র যৌনজীবন তার ভক্তদের কাছে বার বার মুখরোচক গল্প নিয়ে হাজির হয়েছিল। বইটি সেইসব গল্পকে নতুন করে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। বইটিতে মরিসে জানাচ্ছেন তার প্রথম গভীর সম্পর্কের কথা। বইতে জানান, তিনি জ্যাক ওয়েন নামের এক পুরুষের প্রেমে পড়েন। পত্রিকাগুলো তার বইয়ের প্রচারে এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া শুরু করলে মরিসে একটা বিবৃতি দেন। তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি সমকামি নয়, কিন্তু টেকনিক্যাল কারণেই আমি সমকামি।
গায়িকা অ্যানি লেনক্স বইটির উচ্ছসিত প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মরিসে জীবনের ভিন্ন ভিন্ন মাত্রাকে চমৎকারভাবে এক করতে পেরেছেন।
নেইল ম্যাককরমাইক নামের এক সমালোচকের মতে, এটি বব ডিলনের পর সবচেয়ে সুলিখিত সাংগীতিক আত্মজীবনী।
(দ্য রিপোর্ট২৪/ডব্লিউএস/নভেম্বর ০৩, ২০১৩)