মাসুম আওয়াল, দ্য রিপোর্ট : ছোটপর্দার দুই প্রিয় মুখ নাঈম-নাদিয়া। ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি বিয়ে করেছেন তারা। মজার ব্যাপার হলো তাদের বিয়েটা হয়েছে হঠাৎ করে। বিয়ের আগে শোনা যায়নি তাদের নিয়ে কোনো রকম প্রেমের গুঞ্জন। তাই তাদের ভালোবাসার গল্পটা একটু অন্যরকমই বটে। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমের পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো তাদের ভালোবাসার গল্প।

ভালোবাসা কারে কয়!

সখি ভালোবাসা কারে কয় গানের লাইনটা মনে পড়ছে। ‘ভালোবাসা একটা অনুভূতির নাম। প্রিয় মানুষকে অন্ধের মতো বিশ্বাস করা, কোনো রকম কারণ ছাড়ায় তার সঙ্গে জীবনেটাকে ভাগাভাগি করার নামই হলো ভালোবাসা’। এভাবেই ভালোবাসার সংজ্ঞা দিয়েছেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা নাঈম। অন্যদিকে নাদিয়াও বলেন, ‘ভালোবাসা সংজ্ঞা জানতে চাই প্রত্যেকের কাছেই হয়তো আলাদা আলাদা উত্তর পাওয়া যাবে। কিন্তু সব কথার মূল ভাব আসলে একটাই ভালোবাসা একটা আপেক্ষিক বিষয়, মনের অনুভূতির বিষয়। এর সংজ্ঞা আসলে ভাষায় বলে বোঝানো সম্ভব নয়।’

দেখিলাম তারে...

নাইম-নাদিয়ার পরিচয়টা অনেক দিনের। তবে মনের ভেতর একে অপরকে আবিষ্কার করার বিষটি ঘটেছে ২০১৫ সালের মাঝামঝি সময়ে। প্রথম পরিচয়ের বিষয়টি খুলে বললেন নাঈম, ‘অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী নাদিয়ার সঙ্গে পরিচয় অনেক দিন থেকে। অনেকের মতো তার নাচ ও অভিনয় আমরও ভালো লাগতো। তবে নতুন করে তার সঙ্গে পরিচয় হওয়া গত বছর। নাজনীন হাসান চুমকী আপার পরিচালনায় একটি নাটকে অভিনয় করতে গিয়ে নাদিয়াকে নতুনভাবে আবিষ্কার করা। আমি সেই নাটকে তার কো-আর্টিস্ট ছিলাম। মনের আদান-প্রদান সেখানেই। পরবর্তী দায়িত্ব নিয়েছেন বাবা।

বন্ধু তোর বরাত লইয়া...

বিয়ের আগে নাঈম-নাদিয়ার প্রেম নিয়ে তেমন একটা গুঞ্জন শোনা যায়নি। হঠাৎ করেই ২০১৬ সালের ১৫ জানুয়ারি গুলশান ক্লাবে তাদের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়। বিয়েতে দুই শিল্পীর পরিবারের সদস্য, স্বজন ও সহকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। নাঈম বললেন, ‘আমরা যে অনেক দিন প্রেম করে বেড়িয়েছি বিষয়টি কিন্তু সেই রকম নয়। আমাদের ভালোলাগার ব্যাপারটি বাড়িতে জানানোর পর পারিবারিকভাবেই বিয়ের দিকে এগিয়েছি আমরা। আমার বাবা নাদিয়ার আম্মুর কাছে আমার বিয়ের প্রস্তাব পাঠায়। তারাই আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে আমাদের বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন।’

বর-বউয়ের সাজে তারা

বিয়ের দিন নাদিয়া পরেছিলেন লালপেড়ে সোনালী শাড়ি, টিকলি-ঝাপটা-নথ। সব মিলিয়ে তাকে মানিয়ে ছিল বেশ। নেভি ব্লু স্যুট-টাইয়ে নাদিয়ার পাশে দাঁড়ানো বর নাঈম। তাদেও বিয়ের ছবি গণমাধ্যমে ছড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বয়ে গেছে ঝড়। ফেসবুকে তাদের ভক্তরা অভিনন্দনও জানিয়েছেন।

দু’জনে হানিমুনে

এই জুটিরও অবস্থা নব্যবিবাহিত তারকা জুটি শখ নিলয়ের মতোই। ব্যস্তর কারণে বিয়ের পর হানিমুনের জন্য কোথাও যাওয়া হয়নি তাদের। বিয়ের দুই-একদিন বাদেও সমান তালে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন দু’জনই। নাদিয়া বলেন, ‘আগে থেকেই সিডিউল দেওয়া ছিল বেশকিছু নাটকের। ধারাবাহিকের কাজও চলছে নিয়মিত। হাতের কাজগুলো শেষ করলে তবেই সময় পাব। দেখা যায়, কোথায় ঘুরতে যাওয়া যায়।

চলছে বোঝা-পড়া

প্রশ্ন করা হলো— নাঈম-নাদিয়ার মধ্যে বোঝা-পড়াটা কেমন? উত্তর দিলেন নাঈম। ‘আমি আমার মতো স্বাধীনভাবে বেড়ে উঠেছি ছোটবেলা থেকেই। তবে পরিবারের দিকে আমার খেয়াল থাকতো সব সময়। বাড়িতে কখন কী লাগবে। বাবার কী লাগবে, মায়ের কী লাগবে; সবদিকেই খোঁজ রাখতাম সব সময়। এবার শুরু হলো নতুন জীবন। সবে তো শুরু। বোঝার চেষ্টা করছি। বাবা-মার দোয়া নিয়ে আমরা সুন্দর একটা জীবন শুরু করেছি। সারা জীবন যেন এমন সুন্দরভাবেই কাটাতে পারি। আমি মনে করি এক অপরের যত্ন নিলেই সংসারিক জীবন সুন্দর হয়ে যায়’।

নাঈম আরও বলেন, আমাদের নতুন সংসার গুছিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন বাবা আর নাদিয়ার মা। তাই আমাদেও ওপর চাপ কিছুটা কম।

শেষ কথা

এফ এস নাঈম মডেলিং ও অভিনয় চালিয়ে যাচ্ছেন সমান তালে। নাদিয়াও ব্যস্ত তার অভিনয় ও নাচ নিয়ে। বর্তমানে বৈশাখী টেলিভিশনে প্রচারিত থ্রিলারধর্মী ধারাবাহিক ‘গন্তব্য নিরুদ্দেশ’-এ একসঙ্গে কাজ করছেন এই দুই তারকা। এ ছাড়াও আগে অভিনয় করেছেন ‘জাগো’ চলচ্চিত্রে।

(দ্য রিপোর্ট/এএ/ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৬)