ময়দানের ভিতরে অবৈধ হকার, নির্বিকার পুলিশ
কাওসার আজম ও শামীম রিজভী, ইজতেমা ময়দান থেকে : বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় দিন শনিবার। রবিবার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব।
মুসলিম জাহানের দ্বিতীয় বৃহত্তম মহাসমাবেশ বিশ্ব ইজতেমায় শুধু বাংলাদেশের মুসল্লিরা নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসল্লিরাও অংশ নেন। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের চাহিদাকে পুঁজি করে ময়দানের ভিতরে বসেছে কিছু হকার ও ব্যবসায়ী।
তাবিজ-কবজ, যৌনশক্তি বর্ধক ওষুধ, গাছের শেকড়-বাকল, চুলকানি মলম, ধুলার থেকে রক্ষার জন্য মুখের মাস্ক, তথাকথিত হাতের জ্যোতিষ আংটি ও লাল-নীল পাথরসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে হকাররা ময়দানের ভিতরেই বসে পড়েছেন।
এ সব অবৈধ হকারদের দোকানে মুসল্লিদের মজমা বসলে পকেটমাররা সুযোগ বুঝে তাদের কাজ সেরে নিচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, এ সব হকারদের উচ্ছেদের জন্য প্রশাসনিকভাবে তেমন কোনো ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যায়নি। অথচ প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী ময়দানের বাইরের হকারদের শুধু উচ্ছেদই নয়, গ্রেফতারও করা হচ্ছে। তা হলে কেন ময়দানের ভিতরের হকারদের গ্রেফতার না করে পুলিশ তাদের অর্ধেক দায়িত্ব পালন করছে?এ প্রসঙ্গে জানতে গাজীপুর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সঞ্জিব কুমার রায়ের কাছে দু’বার ফোন করা হলে, তিনি এখনো ইজতেমার এলাকায় আসেননি তাই কিছু বলতে পারছেন না বলে দ্য রিপোর্টের কাছে জানান।
টঙ্গী থানার অফিসার ইনচার্জ ইসমাঈল হোসেন দ্য রিপোর্টকে বলেন, বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৮ জন পকেটমারকে আটক করেছে পুলিশ। তবে প্রথম পর্বে শতাধিক পকেটমার ও হকারদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
ইজতেমার ময়দানে হকারদের প্রবেশে অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে ইসমাঈল হোসেন বলেন, না ইজতেমার ময়দানে হকারদের প্রবেশে কোনো অনুমতি দেওয়া হয়নি।
ইজতেমার ময়দানে বিভিন্ন হকারদের তো দেখা যাচ্ছে এবং এদের আসরে এসে মুসল্লিরা পকেটমারের কবলে পড়ছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এমন হচ্ছে কিনা বলতে পারছি না। তবে মুসল্লিদের যাতে কোনো হয়রানির শিকার হতে না হয়, সে জন্য পুলিশ কিছুক্ষণ পর পর টহল দিচ্ছে।
এসআই মনির দ্য রিপোর্টকে বলেন, নিষেধাজ্ঞা না মানায় ময়দানের বাইরে থেকে এ পর্যন্ত ১৫০ থেকে ২০০ জন হকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে।অন্যদিকে ময়দানের ভিতরে ফকিরদের যেন মেলা বসেছে। এ সব ফকিররা অবাধে ময়দানের ভিতর ভিক্ষা করে চলেছেন। কিন্তু প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। অথচ বাইরে কোনো ফকিরকে প্রশাসন বসতে দিচ্ছে না। বসতে গেলেই তাদের লাঠিচার্জ করে উচ্ছেদ করে দিচ্ছে।
(দ্য রিপোর্ট/কেএ-এসআর/জেএম/সা/ফেব্রুয়ারি ০১, ২০১৪)