প্রস্তুত সুখস্মৃতির সাগরিকা, চট্টগ্রামে পৌঁছেছে ২ দল
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ঢাকাপর্ব শেষ করে চট্টগ্রামে পৌঁছেছে বাংলদেশ ও প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। প্রস্তুত সাগরিকার জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। শনিবার বিকাল ৫টায় ২ দলের ক্রিকেটার-কর্মকর্তারা পা রেখেছেন বন্দরনগরীতে। বিমানবন্দরের আশপাশে বিপুলসংখ্যক ক্রিকেটপ্রেমীর ভিড় সামলাতে হিমশিম খেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এমনকি দর্শকদের সেই ভিড় ঠেকেছে হোটেল প্যানিনসোলা পর্যন্ত।
বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় শ্রীলঙ্কা, দুপুর দেড়টায় বাংলাদেশ সাগরিকায় অনুশীলন করবে।
ঢাকা টেস্টের ব্যর্থতা ভুলে নতুন প্রেরণায় উজ্জীবিত বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে তারা শেষ টেস্ট এবং ২টি টোয়েন্টি২০ ম্যাচ খেলবে। প্রায় ৩ বছর পর ইনিংস হার। শোকাহত জাতি। সঙ্গে ক্রিকেটাররাও। শোককে শক্তিতে পরিণত করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে পয়া চট্টগ্রামে সুযোগ এসেছে ঘুড়ে দাঁড়ানোর। চট্টগ্রামে ঘুরে দাঁড়াবে বাংলাদেশ এই বিশ্বাস অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের। শনিবার বাংলালিংকের অনুষ্ঠানে সাকিব বলেছেন, ‘সব দলেরই একটি বাজে সময় আসে। হয়ত আমাদেরও এখন তা চলছে। তবে অচিরেই তা কেটে যাবে।’
‘তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘গত বছর আমরা এমন খারাপ কোনো ম্যাচ খেলেনি। এটি ছিল বাজে একটি ম্যাচ, আমরা যত দ্রুত সম্ভব এটি ভুলে যেতে চাই। আশা করি, আমরা দ্বিতীয় টেস্টে ঘুরে দাঁড়াতে পারব। দলের সবাই কঠোর পরিশ্রম করছে। চট্টগ্রামে আমাদের ভালো স্মৃতি আছে, ভালো খেলার ব্যাপারে আমি আত্মবিশ্বাসী।’
টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে জিম্বাবুয়ে ছাড়া বাকি দেশগুলো ইতোমধ্যে চট্টগ্রামস্থ জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে একটি করে টেস্ট ম্যাচ খেলেছে। শুধু ভারত ও শ্রীলঙ্কা ২টি করে ম্যাচ খেলেছে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে মুশফিকরা এখন পর্যন্ত ১১টি টেস্ট খেলেছে। জয় না পেলেও, ড্র করেছে ৩টিতে। ২০০৬ সালে ভারতের বিপক্ষে ড্র ছাড়াও ২০১১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ২০১৩ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ড্র রয়েছে বাংলাদেশের। তবে এই চট্টগ্রামেই বাংলাদেশের সুখময় স্মৃতি রয়েছে। সাগরিকায় স্টেডিয়াম গড়ে ওঠার আগে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অধরা প্রথম টেস্টে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।
২০০৬ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ ৮ উইকেটে হেরেছে। বাংলাদেশের সামনে ২০০৯ সালেও জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে সুযোগ এসেছিল প্রতিশোধ নেওয়ার; কিন্তু সেবারও হেরেছে অসহায়ভাবেই, ৪৬৫ রানের বড় ব্যবধানে। বাংলাদেশ কী পারবে চট্টগ্রামের ভেন্যুতে ১-১ সমতা ফেরাতে? আগের ২ টেস্টেও বাংলাদেশ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল। ২০০৬ সালে ২ ইনিংস মিলে মুশফিকদের সংগ্রহ ছিল (৩১৯ ও ১৮১)। ২০০৯ সালে উন্নতির বদলে আবারও ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশ। তাদের সংগ্রহ ছিল ২০৮ ও ১৫৮ রান। এমন পরিসংখ্যান নিয়ে ক্রিকেটভক্তরা শঙ্কিত। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে নিজেদের ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে মেলে ধরতে পারবে; এমনটাই প্রত্যাশা ক্রিকেটপ্রেমী চট্টগ্রামবাসীর।
তবে এটা ঠিক চট্টগ্রামের সাগরিকায় বাংলাদেশ সর্বশেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন সোহাগ গাজী। প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসে বোলার গাজী ঈর্ষণীয় হ্যাটট্রিকসহ তুলে নিয়েছেন ৬ উইকেট। এমনকি বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ডের করা ৪৬৯ রানের প্রথম ইনিংস টপকে ৫০১ রান করেছে। আর দ্বিতীয় ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের ২৫৬ রানের ছুড়ে দেওয়া টার্গেট নিয়ে বাংলাদেশ তুলেছে ১৭৩/৩ রান। সময় ছিল না বলেই ম্যাচ ড্র হয়েছে।
২০১৩ সালের অক্টোবরের সাগরিকার সেই সুখস্মৃতি ক্যানভাসের পাতায় ভেসে উঠতে পারেই!
(দ্য রিপোর্ট/আরআই/এএস/সিজি/এনআই/জানুয়ারি ২০১৪)