‘ক্রসফায়ারের মাধ্যমে কবরের শান্তি চাই না’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে শান্তি রক্ষার জন্য ক্রসফায়ার দেওয়া হয়। ক্রসফায়ারের মাধ্যমে বিচারবহির্ভূত হত্যা চলছে। কবরের শান্তিকে যদি শান্তি বলা হয়, তবে সেই শান্তি আমরা চাই না। আমাদের এ শান্তি দরকার নেই।’
তিনি বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিরোধীদলীয় নেতাদের ক্রসফায়ার দেওয়া হচ্ছে। এ সব হত্যাকাণ্ড বিচারবহির্ভূত ও নিন্দনীয়। কারণ বন্দুকযুদ্ধ হলে সেখানে সরকারি বাহিনীর কেউ তো নিহত হতে পারত। ক্রসফায়ার দেওয়ার পর বলা হয়, কয়েকজন পুলিশ আহত হয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট কতজন, কীভাবে কতটুকু আহত হয়েছেন তার কোনো ব্যাখ্যা আজ পর্যন্ত দিতে পারেনি।
শনিবার রাজধানীর বিয়াম অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে প্যানেল সদস্য হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।
দর্শকের প্রশ্ন ‘যৌথবাহিনীর অভিযানের সময় তাদের গুলিতে যে সব মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে, সেগুলোকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলা যায় কি’-এর উত্তরে আসিফ নজরুল এ সব কথা বলেন।
এ প্রশ্নের উত্তরে জাতিসংঘের সিডো কমিটির সাবেক চেয়ারপারসন সালমা খান বলেন, আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে পুলিশ নিজের দেশের নাগরিককে গুলি করে হত্যা করতে পারে না। তাই অবশ্যই ক্রসফায়ারকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলতে হবে।
‘সরকার আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলছে। নির্বাচনের পর বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ক্রসফায়ার দেওয়াই কি তাহলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা’- দর্শক সারির এমন মতামতের উত্তরে আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী ফারুক খান বলেন, ক্রসফায়ারকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলা যেতে পারে। তবে যারা নিহত হচ্ছেন তারা সবাই সন্ত্রাসী। প্রতিটি ঘটনার তদন্ত রিপোর্ট পত্রিকায় প্রকাশিত এবং শাস্তি পাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। আর বিএনপি-জামায়াত যেখানে নির্যাতন চালিয়েছে, সে সব জায়গায়ই বেশি ক্রসফায়ার হচ্ছে।
এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহজাহান ওমর বীরউত্তম বলেন, বিরোধী দলকে প্রতিহত করার জন্য ক্রসফায়ারের মাধ্যমেহত্যা, গুম করা হচ্ছে। ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ ছাড়া কোনো পুলিশ কখনও গুলি করতে পারে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
বিবিসির সংবাদদাতা আকবর হোসেনের পরিচালনায় সংলাপটি অনুষ্ঠিত হয়।
(দ্য রিপোর্ট/এসএ/জেএম/সা/জামান/ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৪)