দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : মহেঞ্জোদারোর ধ্বংসাবশেষে উৎসবের আয়োজন ঠেকাতে পাকিস্তানের সিভিল সোসাইটির কর্মীরা লারকানায় আন্দোলনে নেমেছে। ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হিসেবে সংরক্ষণের ঘোষণা সত্ত্বেও এখানে সিন্ধু সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে।

সিন্ধুর ক্ষমতাসীন দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির তরুণ নেতা বিলওয়াল ভুট্টো জারদারির মাথা থেকেই এসেছে এ আয়োজনের প্রস্তাব। বিদেশে পড়াশোনা ও বেড়ে ওঠার জন্য বিলওয়ালকে অনেক সময়ই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। আর তা দূর করতেই নিজের প্রদেশে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছেন তিনি। উৎসব শনিবার শুরু হওয়ার কথা।

গত সপ্তাহে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি মহেঞ্জোদারোসহ পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বাঁচানো জরুরি বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু মহেঞ্জোদারোসহ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অনেক স্থানই তার দলের ব্যক্তিদের দখলে। প্রাদেশিক সরকার ঐতিহ্য সংরক্ষণে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন সংরক্ষণবাদীরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান মহেঞ্জোদারোর ধ্বংসাবশেষকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। মঞ্চ তৈরির জন্য ধ্বংসাবশেষের চারদিকে কাঠ আর স্টিল পোঁতা হচ্ছে। যেখানে একটি লাইট শো’র আয়োজন করা হবে। উৎসবের উব্দোধনী অনুষ্ঠানের জন্য এই নির্মাণকাজ পাঁচ হাজার বছরের পুরনো এ নিদর্শনের ব্যাপক ক্ষতি করবে বলে মনে করছে আন্দোলনকারীরা।

লারকানা থেকে বিবিসির প্রতিনিধি শাহজেব জিলানি জানিয়েছেন, আন্দোলনকারীরা বিলওয়াল ভুট্টো আর প্রাদেশিক সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে আন্দোলন করেছে।আদেল সোলাঙ্গি নামের একজন আন্দোলনকারী বলেন, মহেঞ্জোদারো পাকিস্তানবাসীর জন্য একটি পবিত্র স্থান। এটি সরকারি অনু্ষ্ঠান আয়োজনের কোনো জায়গা নয় বলেও উল্লেখ করেন ওই আন্দোলনকারী। খাদেম চান্দিও নামের আরেকজন আন্দোলনকারী বলেন, ভুট্টো জারদারি ও তার দলেরউচিৎ সাংস্কৃতিক উৎসব আয়োজন না করে বরং আইনশৃঙ্খলা উন্নয়নে মনোযোগ দেয়া।

বিশেষজ্ঞদের অনেকে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রতিনিধিদের এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপের অনুরোধ করেছেন।

ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ স্যার জন মার্শাল ‍১৯২২ সালে মহেঞ্জোদারোর এ ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কার করেন। সিন্ধু সভ্যতার এ নিদর্শন বন্দরনগরী করাচি থেকে ৪২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এটি পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো শহরের ধ্বংসাবশেষ। পাকিস্তানের ছয়টি বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম হওয়ায় এই এলাকার রয়েছে বিশেষ সাংস্কৃতিক গুরুত্ব। সূত্র : বিবিসি।

(দ্য রিপোর্ট/আরজে/জেএম/জামান/ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৪)