নরসিংদী সংবাদদাতা : গাঁজা বিক্রির জের ধরে কিশোর নাঈমকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার চার বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে নরসিংদী গোয়েন্দা পুলিশ।

জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে শনিবার সকালে গ্রেফতার চারজনকে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। তারা হলো- সাইফুল ইসলাম (১৫), কাউসার আহমেদ (১৩), ফয়সাল হোসেন (১৪) ও সিরাজুল ইসলাম (১৪)।

সাংবাদিকদের সামনে তারা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।

উল্লেখ্য, শুক্রবার বিকেলে জেলা হাসপাতালের পেছনে একটি নির্মাণাধীন ভবনে নাঈমের লাশ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ এসে লাশটি উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

ওই ঘটনায় নাঈমের বাবা বাদী হয়ে চারজনের বিরুদ্ধে সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এদিকে, নাঈমের লাশ উদ্ধারের আধাঘণ্টার মধ্যেই জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) ফিরোজ আহম্মেদ মুন্সী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে কাউসারকে আটক করে। পরে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সদর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে শুক্রবার রাতের মধ্যে বাকি তিনজনকে আটক করা হয়। পরে তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়।

সাংবাদিকদের সামনে গ্রেফতার হওয়া চারজন জানায়, তারা সবাই নাঈমের বন্ধু ও মাদকাসক্ত। দুই মাস আগে নাঈম সাইফুলের কাছ থেকে ১৫০ গ্রাম গাঁজা চুরি করে বিক্রি করে দেয়। পরে বিষয়টি সাইফুল জেনে গেলে তার কাছে ক্ষমা চায় নাঈম। কিন্তু সাইফুল ক্ষমা না করে তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে। সে অন্য বন্ধুদের সহায়তাও চায়।

তারা আরও জানায়, পরিকল্পনা অনুযায়ী বুধবার সকালে নাঈমকে নিয়ে সারাদিন নরসিংদীর বিভিন্ন স্থানে ঘোরে তারা। সন্ধ্যার পর তারা নরসিংদী থেকে ভৈরবে চলে আসে। ভৈরব স্টেশনে তারা রাত কাটায়। পরদিন (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ফিরে আসে নরসিংদীতে। বিকেলে তারা ঢাকা-সিলেট রেল সড়কের চিনিশপুর খেজুর গাছতলায় ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করে। এ সময় নাঈম অনেকটা নিস্তেজ হয়ে পড়ে। তখন তারা নাঈমকে ইট দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে। পরে লাশ জেলা হাসপাতালের পেছনে একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায় এবং সেখানে বালি দিয়ে ঢেকে রাখে।

জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জানুয়ারি মাসে নরসিংদীতে ১২টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া ডাকাতি ও ছিনতাই হয়েছে ৩০টির মতো।

(দ্য রিপোর্ট/এমপিএম/এএইচএ/এমএআর/জামান/ফেব্রুয়ারি ২, ২০১৪)