‘মেলায় আসছে ছোটদের জন্য ৩৫ বই’
আলী ইমাম বাংলাদেশের প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক। গল্প, উপন্যাস, প্রবন্ধ, কবিতা, ফিচার, ভ্রমণকাহিনী, বিজ্ঞান কল্পকাহিনী সবই তিনি লিখেছেন ছোটদের জন্য। তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৫০০ ছাড়িয়েছে। আলী ইমাম বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহা-ব্যবস্থাপক ছিলেন। ২০০৬ সালে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। অসংখ্য উল্লেখযোগ্য বইয়ের রচয়িতা আলী ইমাম এ দেশের শিশু-কিশোরদের মানসিক বিকাশ ও সুন্দর জীবন গঠনে লেখালেখির মাধ্যমে নিরন্তর ভূমিকা রেখে চলেছেন। স্বীকৃতি স্বরূপ ২০০১ সালে তিনি শিশুসাহিত্যে বাংলা একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন। দ্য রিপোর্টের পক্ষ থেকে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আদিত্য রুপু
এবার কী কী বই আসছে? কোন প্রকাশনী বের করছে?
সবমিলিয়ে বই আসছে ৩৫টি। সবই ছোটদের। এর মধ্যে কিশোর কবিতার বই ‘হিরে কুচি জোনাকি’ আনছে সাহস পাবলিকেশন্স ও ‘মেঘের নিচে পথ’ আনছে সিদ্দিকীয়া। আদিগন্ত প্রকাশনী থেকে বেরুচ্ছে ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’, ‘কাজী নজরুল ইসলাম’ ও ‘সত্যজিৎ রায়’ জীবনীগ্রন্থ। এ ছাড়াও ন্যাশনাল পাবলিকেশন্স আনছে ‘ভীনদেশের লোককাহিনী’ সিরিজের ১০টি বই।
প্রকাশিত নতুন বই সম্পর্কে বলুন?
এবারের বইগুলোর মধ্যে ‘জীবনীগ্রন্থমালা’ ও ‘ভীনদেশের লোককাহিনী’র বই বেশি লিখেছি। বরাবরের মতো ‘বিজ্ঞান কল্পকাহিনী’ ও ‘জীবজন্তু-পরিবেশ’ এর পরেও বেরুচ্ছে বেশ কিছু বই। ছোটদের স্বপ্ন-রঙিন ভুবনের কথা তুলে ধরেছি আমার কিশোর কবিতার বইগুলোতে।
বইকে কীভাবে প্রান্তিক পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া যায় বলে মনে করেন?
প্রকাশকরাই ভালো বলতে পারবেন বিষয়টি। লেখকরা আর কত দায়িত্ব নেবে! বইকে প্রান্তিক পর্যায়ে পৌঁছানোর জন্য প্রকাশক এবং সরকারের ভূমিকা বাড়াতে হবে। তবে বই কিন্তু আগের চেয়ে এখন অনেক সহজলভ্য হয়ে উঠেছে।
এবারের বই কেনার পরিকল্পনা নিয়ে বলুন?
প্রতিবছরই মেলা থেকে প্রচুর বই কেনা হয় আমার। প্রচুর বই উপহার হিসেবেও পাওয়া হয়। খুব বেশি পরিকল্পনা করে বই কেনা হয় না। চোখে লেগে গেলে বই কিনি।
বইমেলার স্থান সম্প্রসারণের বিষয়টি কীভাবে দেখছেন?
বইমেলা শুধু মেলা নয়। এর সঙ্গে জড়িত আমাদের সাংস্কৃতিক বন্ধন ও হৃদয়ের চেতনা। বইমেলা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত এসেছে। সামনে হয়তো আরও আসবে। তবে কোনোভাবেই বইমেলার দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যকে ক্ষুণ্ন করা যাবে না। এ ব্যাপারে নজর রাখতে হবে।
আমাদের শিশুসাহিত্য নিয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?
বাংলা শিশুসাহিত্য যথেষ্ট সমৃদ্ধ একটি শাখা। ঠাকুরমার ঝুলি, ময়মনসিংহ গীতিকা থেকে শুরু করে বাংলার রূপকথা হয়ে আমরা পেয়েছি সুকুমার, রবীন্দ্রনাথ, জসীমউদ্দীনের মতো বিখ্যাত সব লেখকদের। বিশ্বের কোথাও প্রধান ও বড় লেখকরা ছোটদের নিয়ে আমাদের লেখকদের মতো এত লিখেছেন কী না সন্দেহ! সেই ধারাবাহিকতায় এই সময়ের লেখক ও তরুণরা ভালো করছেন। বিশ্বসাহিত্য নিয়ে উচ্চাভিলাষ কমিয়ে আমাদের শিশুসাহিত্যকে তাই বেশি বেশি অনুবাদ করে অন্য ভাষায় উপস্থাপন করতে হবে।
ছোটদের জন্য কিছু বলুন?
আজকে যারা ছোট তারাই তো একদিন বড় হবে। বড় হয়ে সবরকমের বইয়ের পাঠক হবে। এ জন্য মেলায় ছোটদের আগমন বাড়ানো উচিৎ। তাদের মননশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে বইয়ের ভূমিকা অতুলনীয়। একজন শিশুসাহিত্যিক হিসেবে আমি তো অবশ্যই চাইব, ছোটরা বেশি করে আসুক।
(দ্য রিপোর্ট/এআর/ এমডি/এএইচ/ ফেব্রুয়ারি ০২,২০১৪)