শিবির নিধনের পরিকল্পনা
শাবির আশপাশের মেস ছাড়ার নির্দেশ পুলিশের
সিলেট অফিস : সহিংস শিবির কর্মীদের গ্রেফতারে পুলিশ খুঁজছে ভিন্ন পথ, ভিন্ন কৌশল। শনিবার রাতে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) জালালাবাদ থানার পুলিশ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার শিবির নিয়ন্ত্রিত মেস খালি করার নির্দেশ দেয় বাড়ির মালিকদের।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে অবস্থিত নয়াবাজার এলাকার সব মেসগুলোতে রয়েছে শিবিরের বিশাল আস্তানা এমন তথ্যও রয়েছে পুলিশের কাছে। ওই এলাকায় প্রায় দশটির মত মেস রয়েছে। এ সব মেসে শিবির ক্যাডাররা অবস্থান নিয়ে শাবি ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে। যে কারণইে ওই সব মেস খালি করে দেওয়ার জন্য মালিকদের নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। শনিবার রাত ৮টায় মেস মালিকদের ডেকে নিয়ে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
এসএমপি’র জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গৌসুল হোসেন মেস খালি করার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘যে মেসে শিবির কর্মীরা থাকে সে সব মেস অতি দ্রুত খালি করার জন্য মেস মালিকদের বলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শিবিরের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নস্যাৎ করতেই এ কৌশল নেওয়া হয়েছে।’
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবি) প্রশাসন এবং পুলিশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ছাত্রশিবির। সম্প্রতি শিবির কর্মীরা শাবির বাস, ভবন ভাঙচুরসহ অন্য রাজনৈতিক কর্মীদের ওপরও হামলা চালিয়েছে। তাদের সহিংস রূপের কাছে জিম্মি হয়ে পড়ছে শাবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
এ ছাড়া তাদের হামলার হাত থেকে রেহাই পাননি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মানবন্ধনে হামলা করে পুলিশের খাতায় নাম ওঠে শিবিরের। পুলিশও তাদের গ্রেফতারে মরিয়া হয়ে ওঠে। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। কয়েকজন শিবিরকর্মী ধরা পড়লেও আসল নেতারা থেকে যায় ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এ কারণে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে শাবি এলাকা থেকে শিবির সন্দেহে ৮৪ জনকে আটক করে পুলিশ। এর মধ্যে ৬২ সাধারণ শিক্ষার্থী থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তা-ব্যক্তিদের অনুরোধে মুচলেকা নিয়ে পুলিশ ছেড়ে দেয় ওই ৬২ শিক্ষার্থীকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. হিমাদ্রী শেখর রায় বলেন, ‘আমরা পুলিশের কাজে বাধা দিতে পারি না। আমাদের শিক্ষার্থীদের উচিত নয়াবাজার থেকে অন্য কোনো নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়া।’
এ দিকে নয়াবাজার এলাকার ধামালীপাড়ার সকল মেস শিবিরের মেস হিসেবেই পরিচিত। সোসাইটি, রংধনু, মোহনাসহ বেশ অনেকগুলো মেসে শিবির কর্মীরা বসতি গড়েছে। অধিকাংশ সময়ে এ সব মেস থেকেই দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে হামলা চালায় শিবির ক্যাডাররা। হামলা শেষে আবার তারা এখান দিয়েই পালিয়ে যায়। মূলত তাদের এ আস্তানা ভেঙে দেওয়ার জন্যই পুলিশ এ নির্দেশনা দিয়েছে বলে জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দ্য রিপোর্টকে নিশ্চিত করেছেন।
(দ্য রিপোর্ট/এমজেসি/এমসি/সা/ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৪)