খুলনা সংবাদদাতা : ‘আমাগো সবকিছু শেষ হইয়্যা গ্যাছে। এট্টা বই খাতাও নেই। সব পুইড়ে ছাই। বাপ-মায়ে মেলা কষ্ট হইরে লেহাপড়া শিকাইছে। আর বুঝি এসএসসি পরীক্ষাডা দিতে হারলাম না।’ এভাবেই কান্নাভেজা কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন এসএসসি পরীক্ষার্থী শামীম।

নগরীর সোনাডাঙ্গার ময়লাপোতা বস্তিতে শুক্রবার রাতে এক অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। বস্তির ঘর ও আসবাবপত্র তো পুড়েছেই। সেই সঙ্গে পুড়ে যায় বস্তির প্রায় দুই শতাধিক ছেলে মেয়ের বই-খাতা। এমনই দুজন শামীম ও জানু। সম্পর্কে চাচাতো ভাই-বোন। স্থানীয় পিডব্লিউডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ থেকে আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা শামীম ও জানুর।

কিন্তু বস্তিতে আগুন লাগার কারণে তাদের দুজনের এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

আগুনে বই-খাতাসহ সকল শিক্ষা উপকরণ পুড়ে যাওয়ায় পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারার আশঙ্কা প্রকাশ করে জানু দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘সব আশা শেষ। এই মাসের ৯ তারিখে আমাগো পরীক্ষা শুরু। স্যারগো সাজেশন পড়া শেষ। পরীক্ষা দিলে ভালো রেজাল্ট হইতো। কিন্তু এহোন আমাগো থায়োনের জায়গা নাই, খাবার নাই, বই-খাতা কিচ্ছু নাই। দুইডা বছর ধরে লেহাপড়া কইরা পরীক্ষা দেওয়া অনিশ্চিত।’

সমাজের উচ্চবিত্তদের কাছে সহযোগিতা চেয়ে জানুর মা রহিমা বেগম বলেন, ‘মেয়েটাকে অনেক কষ্ট করে লেখাপড়া করাইছিলাম। স্বপ্ন ছিল মেয়েটাকে শিক্ষিত করব। কিন্তু হঠাৎ আগুনে ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, পোশাক, ছেলেমেয়ের বই খাতা সব পুড়ে ছাই হইয়া গ্যাছে।’

এ দিকে, ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে চাকরি করানোর স্বপ্ন ছিল বলে জানান শামীমের মা মোমেনা বেগম। চোখের সামনে ছেলের ভবিষ্যৎ অনিশ্চতায় পড়ে যাওয়ায় হতবাক মোমেনা বেগম।

(দ্য রিপোর্ট/এমএটি/এসআর/জেএম/জামান/ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৪)