বাজারে গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি : দাম কিছুটা বাড়তি
চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের কাঁচাবাজারে আসতে শুরু করেছে গ্রীষ্মকালীন শাকসবজি। তবে গত সপ্তাহের তুলনায় দাম কিছুটা বাড়তি। প্রকার ভেদে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। গরমে পচে যাওয়ার কারণে দাম বাড়তি বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।
শাকসবজির দাম বাড়ালেও এ সপ্তাহে বাজারে মাছ ও মাংসের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। অন্যদিকে সরবরাহ বাড়ায় দাম কমে গেছে মসুর ডালের। কেজিতে ৫ থেকে ৮ টাকা কমে প্রতি কেজি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩২ থেকে ১৩৫ টাকায়। আর বড় দানার মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা। শুক্রবার নগরীর কাজির দেউড়ি, রেয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
খুচরা বিক্রেতারা জানিয়েছেন, উৎপাদন স্থলে দাম না বাড়লেও পাইকারি বাজারে সবজির দাম কিছুটা বেড়ে গেছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সবজি নিয়ে আসার সময় প্রচণ্ড গরমে তা পচে যাচ্ছে। তা ছাড়া পাইকারি আড়ত থেকে কিনে এনেও সুবিধা পাচ্ছে না খুচরা বিক্রেতারা। এখানেও পচে যাচ্ছে।
কাজির দেউড়ি বাজারের সবজি ব্যবসায়ী মো. শাখাওয়াত দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘সবজির দাম বাড়েনি। সরবরাহ রয়েছে পর্যাপ্ত। কিন্ত প্রচণ্ড গরমে সবজি পচে যাচ্ছে। ফলে কিছুটা বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে দাম যেটুকু বেড়েছে তা সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের মধ্যেই আছে।’
সবজির বাজারে বাড়তি দামে প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, ফুলকপি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বাঁধাকপি ২০ টাকা, আলু ২০ টাকা, লাল গোল আলু ৩০ থেকে ৩২ টাকা, গাজর ২০ থেকে ২৫ টাকা, শশা ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ থেকে ২৫ টাকা, বেগুন জাত ভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৬০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শিমের বিচি ৬৫ থেকে ৯০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
রুই মাছ আকার ভেদে প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ২৮০ টাকা, কাতলা মাছ ২২০ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা, সিলভার কার্প ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, পাঙ্গাস ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা, ফার্মের কৈ ২শ’ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা, জীবিত তেলাপিয়া ১৭০ থেকে ২২০ টাকা, সরপুঁটি ২২০ থেকে ২৬০ টাকা, চিতল মাছ ৪৬০ থেকে ৫শ’ টাকা, দেশি শিং মাছ আকার ভেদে সাড়ে ৫শ’ থেকে ৭শ’ টাকা, মাগুর সাড়ে ৬শ’ থেকে ৭শ’ টাকা, কৈ মাছ ২৬০ থেকে সাড়ে ৪শ’ টাকা, শোল মাছ ৪শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা, বোয়াল মাছ সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা, টাকি মাছ ৩২০ থেকে ৪শ’ টাকা।
সামুদ্রিক মাছের মধ্যে ইলিশ ৭শ’ থেকে সাড়ে ৮শ’ টাকা, চাঁদপুরের ইলিশ ১ হাজার ২শ’ থেকে ১ হাজার ৬শ’ টাকা, পোপা মাছ ১৮০ থেকে ৩শ’ টাকা, সুরমা মাছ ৪শ’ থেকে ৪৫০ টাকা , চিংড়ি ৪শ’ থেকে ৯শ’ টাকা, কোরাল ২৮০ থেকে ৪৬০ টাকা, কালো রূপচাঁদা ৩শ’ থেকে ৩৫০ টাকা, সাদা রূপচাঁদা সাড়ে ৭শ’ থেকে ১ হাজার টাকা, লইট্যা ১শ’ থেকে ১২০ টাকা।
ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৫০ টাকা, লেয়ার মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, সোনালি (পাকিস্তানি) ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা, দেশি মুরগি ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা, ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি ডজন ৯৫ থেকে ১শ’ টাকা, কবুতর প্রতিটি ১শ’ থেকে ১৫০ টাকা, গরুর মাংস হাড়সহ ৪শ’ টাকা, হাড়ছাড়া ৫শ’ টাকা, খাসির মাংস ৫শ’ থেকে ৫৮০ টাকা।
এদিকে চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চিকন চাল ৪৪ থেকে ৫৬ টাকা, মোটা চাল ২৮ থেকে ৩৪ টাকা, চিনিগুড়া চাল ৮৭ থেকে ৯২ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি গুড়া ১শ’ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২০ থেকে ২৪ টাকা, চীনা রসুন ২শ’ টাকা, দেশি রসুন ১৬৫ থেকে ১৮০ টাকা, আদা ৮০ টাকা, প্যাকেটজাত লবণ (ছোটদানা) ২৫ থেকে ৩০ টাকা, বড় দানার লবণ ১৮ থেকে ২০ টাকা, চিনি ৪৮ টাকা, ছোলা ৭৫ টাকা, মটর ডাল ৩৯ থেকে ৪১ টাকা, সয়াবিন তেল প্রতি পাঁচ লিটার ৪৫০ থেকে ৪৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা শাহনুর সুলতানা দ্য রিপোর্টকে বলেন, নগরীর অন্যান্য বাজারের তুলনায় এ বাজারে শাকসবজি, মাছ-মাংসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম তুলনামূলক বেশি। এখানে সব ভিআইপিরা বাজার করতে আসেন তাই ব্যবসায়ীরা এ সুযোগটা কাজে লাগান। আমাদের মধ্যে মধ্যবিত্তদের ঠেকায় পড়ে এ বাজারে আসতে হয়।
রিয়াজউদ্দিন বাজারে মুরগি ব্যবসায়ী রফিক বলেন, চলতি সপ্তাহে দেশি মুরগি এবং ফার্মের মুরগির দাম স্থিতিশীল আছে। তবে আগামী সপ্তাহে দাম বাড়তে পারে।
(দ্য রিপোর্ট/এসএস/এম/মার্চ ১১, ২০১৬)