চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের বায়েজিদ থানার রউফাবাদ পাহাড়িকা আবাসিক এলাকায় প্রবাসীর স্ত্রী পারভিন আক্তার (৩২) হত্যার সঙ্গে জড়িত দুইজনকে টেকনাফ থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা হলো পারভিনের বাড়ির সাবেক দারোয়ান মোহাম্মদ ইয়াছিন (২৭), তার বন্ধু মোহাম্মদ মনসুর (২৫)।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, হত্যাকাণ্ডের ১০ দিনের মাথায় গোয়েন্দা পুলিশের সহযোগিতায় দুই খুনিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম নওরীন আক্তার কাকনের আদালতে হাজির করলে দুজনই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এর আগে পুলিশ তাদের কাছ থেকে লুণ্ঠিত ৩৫ হাজার টাকা এবং ৪ ভরি স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধার করেছে।

ওসি মোহাম্মদ মহসিন বলেন, ‘তারা আদালতকে বলেছে, হত্যা নয় মূলত লুটপাট করতেই তারা প্রবাসীর নুরুল আলমের বাসায় হানা দিয়েছিল। লুটপাটের সময় বাঁধা পেয়ে তারা নূরুল আলমের স্ত্রী পারভিন আক্তারকে গলা টিপে হত্যা করেছে। মূলত বাড়ির মালিক আব্দুর শুক্কুরের উপর ক্ষোভ থেকে তারা লুটপাট করতে গিয়েছিল বলে জানায় ইয়াসিন।’

আব্দুর শুক্কুর প্রবাসী নূরুল আলমের আপন ভাই। পাহাড়িকা আবাসিক এলাকায় উক্ত বাড়িতে নিচ তলায় শুক্কুরের পরিবার এবং উপরে ছোট ভাই নূরুল আলমের স্ত্রী পারভিন আক্তার ও তাদের ছেলে মোহাম্মদ সাঈদকে নিয়ে একা থাকত। ইয়াছিন প্রায় ৭/৮ বছর আগে তিনি শুক্কুরের বাড়িতে দারোয়ানের কাজ করতো। সে সময় বাড়ি নির্মাণের কাজ নিয়ে শুক্কুরের সঙ্গে বিরোধ হলে তাকে শুক্কর বিদায় করে দেয়। পরে সে দুবাই চলে যায়। দুবাইয়ে আবারো দেখা হয় শুক্কুরের সঙ্গে, সেখানেও প্রবাসী শুক্কুরের সাথে তার ঝগড়া হয়। শুক্কুরের কারণে সে দুবাইয়ে ১৫ দিন জেল খেটেছিল ইয়াছিন। পরে তাকে সে দেশের সরকার বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। এতে শুক্কুরের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ নিতে ‘মরিয়া’ হয়ে উঠে ইয়াছিন।

ওসি বলেন, ‘সেই ঘটনার সূত্র ধরে ছোট ভাই নূরুল আলমের শিশু সাঈদকে অপহরণের পরিকল্পনা করে ইয়াছিন। পরে সে পরিকল্পনা বাদ দিয়ে নূরুল আলমের ঘরে লুটপাটের ঘটনা ঘটায় এবং তাতে বাধা পেয়ে পারভীন আক্তারকে হত্যা করে।’

চলতি বছর ৫ মার্চ রাত সাড়ে ৯টার দিকে রউফাবাদ পাহাড়িকা আবাসিক এলাকায় নিজ বাসায় খুন হন পারভিন আক্তার। তার আট বছর বয়সী শিশুপুত্র নূর মোহাম্মদ সাঈদের কান্নাকাটি শুনতে পেয়ে পড়শিরা পারভিনের ফ্ল্যাটে এসে দেখেন, তার নিথর দেহ ফ্লোরে পড়ে আছে। খুনিরা ঘরের স্টিলের আলমারি ভেঙে স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও বেশকিছু মালামালে লুটপাট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনার দুইদিন পরই নূরুল আলম দেশে এসে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ সন্দেহজনক নূরুল আলমের ভাতিজা আব্দুর শুক্করের ছেলে মামুনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলেও তার কাছ থেকে কোনো তথ্য পায়নি।

বায়েজিদ থানার ওসি মহসিন জানান, এ ঘটনায় মামুনের কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি।

(দ্য রিপোর্ট/জেএস/এপি/এইচ/মার্চ ১৬, ২০১৬)