রাজশাহী সংবাদদাতা : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে রবিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনায় কোনো মামলা না হলেও ওই শিক্ষার্থীদের আসামি করে সোমবার রাত পর্যন্ত ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলার দুটির বাদী হয়েছেন রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তন্ময় আনন্দ অভি। এতে উল্টো তাদের উপরই হামালার অভিযোগ আনা হয়েছে।

রাজশাহী মহানগর উপ-পুলিশ কমিশনার (পূর্ব) প্রলয় চিসিম দ্য রিপোর্টকে বলেন, রবিবারের ঘটনায় ছয়টি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে রাবি প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি, পুলিশ বাদী হয়ে দুটি এবং রাবি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।

তিনি বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রার ফতরের উপ-রেজিস্ট্রার ড. সাদ আহমেদ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছেন। এর মধ্যে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, প্রশাসনিক কাজে বাধাদান ও জুবেরী ভবনে হামলা-ভাঙচুরের অভিযোগে একটি মামলায় আন্দোলনরত ৬০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত দেড়শজনকে আসামি করে একটি এবং বিস্ফোরক আইনে ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত দেড়শজনের বিরুদ্ধে অপর মামলাটি করেন। এ মামলায় আটক রাবি ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সজীবকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

অপরদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে মহানগরীর মতিহার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাসুদার রহমান বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেছেন। এর মধ্যে দুটি মামলার আসামি তিন শতাধিক। সরকারি কাজে বাধাদান, ভাঙচুর ও বিস্ফোরক আইনে পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দুটি দায়ের করা হয়েছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে থানার অপর উপ-পরিদর্শক মোমেনুল ইসলামকে।

এ ছাড়া আন্দোলনরতদের উপর অস্ত্র উঁচিয়ে গুলি ও প্রকাশ্যে হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত রাবি ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও একইভাবে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় উল্টো তাদের ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। এতে ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে। বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেছেন রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তন্ময় আনন্দ অভি।

উপ-পুলিশ কমিশনার প্রলয় চিসিম আরও বলেন, মামলা করার অধিকার সবার রয়েছে। পুলিশ তদন্তসাপেক্ষে সব মামলার ব্যাপারেই প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিবে। এ জন্য তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখন অন্যায়কারীদের খুঁজে বের করাই পুলিশের কাজ।

উল্লেখ্য, কোর্স ফি বাড়ানোর প্রতিবাদ এবং সান্ধ্যকালীন মাস্টার্স কোর্স বন্ধের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে রবিবার হামলা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে এতে অংশ নেয় পুলিশ। এ ঘটনায় সাংবাদিকসহ অর্ধশতাথিক শিক্ষার্থী আহত হন। এরপর সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে সিন্ডিকেট। সোমবার সকাল ৮টার মধ্যে সব শিক্ষার্থী হল ছাড়তে বাধ্য হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ/এএস/এনআই/ফেব্রুয়ারি ৩, ২০১৪)