তিনটি যুদ্ধজাহাজ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
চট্টগ্রাম অফিস : বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে আরও তিনিটি যুদ্ধজাহাজ সংযোজিত হয়েছে। চট্টগ্রামের নেভাল বার্থে শনিবার ১১টায় ‘সমুদ্র অভিযান’, ‘স্বাধীনতা’ ও ‘প্রত্যয়’ নামে নতুন এ যুদ্ধজাহাজ তিনটি উদ্বোধন করেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশা প্রকাশ করেন, ‘বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে সদ্য সংযোজিত তিনটি যুদ্ধজাহাজ দেশের সম্পদ রক্ষা, নিজ জলসীমায় চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং বিশ্বশান্তি রক্ষায় আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’
তিনি বলেন, ‘নৌবাহিনীকে একটি আধুনিক শক্তিশালী ও সক্ষম ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে রূপান্তর বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রয়াস।’
এ সময় জাহাজ তিনটির অধিনায়কদের হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এর মধ্যে দিয়ে যুদ্ধজাহাজ তিনটি নৌবাহিনীতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু করল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাহাজ তিনটি নৌবাহিনীতে অন্তর্ভুক্তির ফলে দেশের বিশাল জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি সমুদ্রে অনুপ্রবেশ ও চোরাচালান রোধ, গভীর সমুদ্রে উদ্ধার তৎপরতা বৃদ্ধি, মৎস্য ও প্রাকৃতিক সম্পদক সংরক্ষণ, তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের ব্লকসমূহে অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সার্বিকভাবে দেশের ব্লু ইকোনমি উন্নয়নে সহায়ক হবে।’
কমিশনিং অনুষ্ঠানে নৌবাহিনীকে একটি আধুনিক শক্তিশালী ও সক্ষম ত্রিমাত্রিক নৌবাহিনীতে রূপান্তর বর্তমান সরকারের ঐকান্তিক প্রয়াসের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি যুদ্ধবহর বৃদ্ধির পাশাপাশি নৌবাহিনীর নিজস্ব বিমানঘাঁটিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়সমূহ গুরুত্বসহকারে তুলে ধরেন। বাংলাদেশ সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষা ও দুর্যোগ মোকাবেলায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে আধুনিক নৌবাহিনীর স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি তা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।
যুদ্ধ জাহাজগুলো উদ্বোধনের পর নৌবাহিনীর বিশেষ সন্ত্রাসবিরোধী মহড়া পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। দেশে প্রথমবারের মতো বিশেষ ধরনের ফায়ার পাওয়ার মহড়ার আয়োজন করে নৌবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী এ মহড়া পরিচালনা করেন নৌবাহিনীর কমান্ডোরা। যাতে একযোগে থাকবে হেলিকপ্টার, টহল এয়ারক্স্যাফট ও যুদ্ধজাহাজ। কর্ণফুলী নদীতে চট্টগ্রাম বন্দর এলাকা ঘিরে এ বিশেষ মহড়া প্রদর্শিত হয়।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হেলিকপ্টার যোগে বাংলাদেশ নেভাল একাডেমির নৌ ঘাঁটি বানৌজা ঈশাখানে এসে পৌঁছালে নৌবাহিনীর প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল নিজামউদ্দিন আহমেদ এবং কমান্ডার চট্টগ্রাম নৌ অঞ্চল রিয়ার অ্যাডমিরাল এম আখতার হাবীব তাকে স্বাগত জানান।
নৌ বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, এ তিনটি যুদ্ধজাহাজ চীন থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। বানৌজা ‘সমুদ্র অভিযান’ জাহাজটি ঘণ্টায় প্রায় ২৯ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলতে সক্ষম। অন্যদিকে বানৌজা ‘স্বাধীনতা ও ‘প্রত্যয়’ নামের আধুনিক ক্ষমতা সম্পন্ন জাহাজ দুটি বিমান বিধ্বসী কামান, জাহাজ বিধ্বংসী মিসাইল এবং সমুদ্র তলদেশের টার্গেটে আঘাত হানতে সক্ষম।
নৌবাহিনী সূত্র আরও জানায়, বানৌজা সমুদ্র অভিযান বাংলাদেশ নৌবহরের ৯ম ফ্রিগেট স্কোয়াড্রনের দ্বিতীয় যুদ্ধজাহাজ। এ স্কোয়াড্রনের প্রথম যুদ্ধজাহাজ বানৌজা ‘সমুদ্র জয়’ ২০১৩ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে কমিশনিং করা হয়। ৩ হাজার ৩১৩ টন ওজন বিশিষ্ট জাহাজটির দৈর্ঘ্য ১১৫ মিটার। জাহাজটিতে দুটি ডিজেল ইঞ্জিন এবং দুটি গ্যাস টারবাইন রয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/এনডিএস/এইচ/মার্চ ১৯, ২০১৬)