ফেসবুকের সমালোচিত ১০ অ্যাপস
মো. শামীম রিজভী ও মেহেদী হাসান, দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : বিভিন্ন সময়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্ক সাইট ফেসবুক ব্যবহারকারীদের জন্য এনেছে নানা উদ্ভাবনী ইন্টারফেস ও অ্যাপস। এর অনেকগুলোই নানা সমালোচনা, মামলা-মোকদ্দমা ও ব্যবহারকারীর সাড়া না পাওয়ায় বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। নিচে এমনই ১০টি অ্যাপস ও ইন্টারফেস তুলে ধরা হলো-
০১. ফেসবুক বিয়েকন : বিজ্ঞাপনী প্রোগ্রাম বিয়েকনের মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছিল ফেসবুক। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের তথ্য তৃতীয়পক্ষের কাছে সরবরাহের লক্ষ্যে উদ্যোগও নিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। এর ফলে প্রাইভেসি লঙ্ঘনের কারণে ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। পরে ফেসবুক ভুল স্বীকার করে। এরপরও সমালোচনা অব্যাহত থাকলে ফেসবুক এটি বন্ধ করে দেয়।
০২. ফেসবুক ডিলস : ২০১১ সালের জানুয়ারিতে ফেসবুক চালু করে ফেসবুক ডিলস নামে শপিং সার্ভিসের। এর মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানীয় ব্যবসাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তাদের বিভিন্ন অফার ফেসবুকে প্রকাশ করাই ছিল এ সার্ভিসের উদ্দেশ্য। তবে এতে ব্যবহারকারীদের তেমন সাড়া না পাওয়ায় ফেসবুক ডিলস বাদ দিয়ে দেয় প্রতিষ্ঠানটি। এর পরিবর্তে চালু হয় চেক-ইন ডিলস।
০৩. ফেসবুক ক্রেডিটস : ফেসবুকের ভার্চুয়াল কারেন্সি ‘ফেসবুক ক্রেডিটস’-এর সঙ্গে ব্যবহারকারীদের পরিচিত করানো হয় ২০০৯ সালে। সাইটটির গেইমারদের জন্য এটি কার্যকর হবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু এর পেমেন্ট সিস্টেমের জটিলতার কারণে অ্যাপ নির্মাতাদের বেশি আকর্ষণ করতে পারেনি। এ কারণে ২০১৩ সালের জুনে ফেসবুক ভার্চুয়াল কারেন্সি ব্যবস্থা বন্ধ করে দেয়।
০৪. ফেসবুক কোশ্চেনস : ফেসবুকের বন্ধুদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য ফেসবুক কোশ্চেনস-এর সূচনা করা হয় ২০১০ সালে। তবে সার্ভিসটি তেমন সাড়া না পাওয়ায় ২০১২ সালে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
০৫. ফেসবুক প্লেসেস : লোকেশন ডিসকভারি ও লোকেশন শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ২০১০ সালে চালু হয় ফেসবুক প্লেসেস। বন্ধুদের সঙ্গে কোনো স্থানে ট্যাগিংয়ের ব্যবস্থাও ছিল এতে। এর মাধ্যমে গুগলের ম্যাপিং সার্ভিসকে চ্যালেঞ্জ জানানো হয়। তবে দ্য প্লেসেস নামটি বাদ দিয়ে এ সার্ভিসকে ‘নিয়ারবাই’-এর সঙ্গে একীভূত করা হয়।
০৬. ফেসবুক গিফটস : ২০১২ সালে ফেসবুক নতুন গিফট সার্ভিসের সূচনা করে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের বাস্তব উপহার দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু সমস্যা হলো- বাস্তবে এসব গিফট দিতে ব্যবহারকারীদের তেমন আগ্রহ দেখা যায়নি।
০৭. ফেসবুক পোক : পোক আইফোনের জন্য একটি ফেসবুক অ্যাপ। এর ধারণ স্ন্যাপচ্যাট থেকে নেওয়া হয়েছিল। এর মাধ্যমে খুব সহজ ও মজার উপায়ে হ্যালো বলা যেত বন্ধুদের। ২০১২ সালের ডিসেম্বরে অ্যাপটি মুক্তি পায়। তবে এরপর এর জনপ্রিয়তা কমে যায়। সম্প্রতি মার্ক জাকারবার্গ একে সিরিয়াস প্রোডাক্টের বদলে রসিকতা বলেই অভিহিত করেছেন।
০৮. নিউ নিউজ ফিড : ২০১৩ সালের মার্চে ফেসবুক চালু করে ‘নিউ নিউজ ফিড’। নতুন এ ডিজাইনে অন্তর্ভুক্ত করা হয় বড় ফরম্যাটের ডিসপ্লে, ফটো ও বিজ্ঞাপন। কিন্তু নতুন এ ডিজাইনে ব্যবহারকারীদের তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে ভবিষ্যতের জন্য এটি সংরক্ষণ করে রাখে ফেসবুক।
০৯. ফেসবুক লাইট : ধীরগতির ও কম ব্যান্ডউইথের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য ‘ফেসবুক লাইট’ চালু করে প্রতিষ্ঠানটি। তবে এ সার্ভিস চালু ছিল ২০০৯ সালের আগস্ট থেকে ২০১০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত প্রায় ৮ মাস। এরপর ফেসবুক তার ব্যবহারকারীদের আনুষ্ঠিকভাবে জানায় সার্ভিসটি বন্ধ করার কথা।
১০. ফেসবুক ক্যামেরা : চলার পথে ছবি শেয়ার করার জন্য ‘ফেসবুক ক্যামেরা’-কে উপযুক্ত বিষয় হিসেবে উপস্থাপন করেছিল ফেসবুক। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছিল, আপনি অনেক ছবি একসঙ্গে শেয়ার করতে পারবেন এর মাধ্যমে। এ ছাড়া আপনার বন্ধুদের সর্বশেষ ফটো সিঙ্গেল ফিডে দেখা যাবে। তবে সমস্যা হয়েছিল- অধিকাংশ মানুষই ফেসবুক ক্যামেরার বদলে নিজেদের ক্যামেরাই পছন্দ করছিলেন। ফলে অ্যাপটি জনপ্রিয়তা পাচ্ছিল না। কিন্তু ইন্সটাগ্রামের জনপ্রিয়তা বাড়ছিল। ফলে অ্যাপটি বন্ধ করে দিয়ে ফেসবুক ইন্সটাগ্রামকে কিনে নেয়।
(দ্য রিপোর্ট/এসআর-এমএইচও/জেএম/এজেড/ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৪)