দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ
চট্টগ্রাম অফিস : চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার রায় ঘোষণার পাঁচ দিন পর পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন আদালত। অস্ত্র আটক মামলার রায়ের পৃষ্ঠা সংখ্যা ২৫৪ ও চোরাচালান মামলায় দেওয়া হয়েছে ২৬০ পৃষ্ঠার রায়। আদালত একই সঙ্গে ১৬ পৃষ্ঠার পর্যবেক্ষণও তুলে ধরেছেন।
রায় প্রদানকারী চট্টগ্রামের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মুজিবুর রহমান মঙ্গলবার দুপুরে পূর্ণাঙ্গ রায়ে স্বাক্ষর করেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ জানান, রায়ের কপি হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছেন, ‘প্রতিবেশী দেশের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফাকে শক্তিশালী করতে দশ ট্রাক অস্ত্র নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। বাংলাদেশের দুটি গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তা এতে সহযোগিতা করেছিলেন। বিষয়টি নিয়ে আদালত বিস্মিত হয়েছেন। এ ছাড়া সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে যাদের নাম সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে তাদের দণ্ডিত করা হয়েছে।
পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, ‘এখানে রাজনৈতিক হয়রানির কোনো সুযোগ নেই। আসামিদের বিরুদ্ধে যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন তাদেরই অধীনস্থ সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন এরা।’
৩০ জানুয়ারি দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় চোরাচালান (বিশেষ ক্ষমতা আইনে) ও অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া পৃথক দুটি মামলার রায় দেন বিচারক। চোরাচালান মামলার রায়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমীর মতিউর রহমান নিজামী এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। একই রায়ে তাদের পাঁচ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।
একই ঘটনায় অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া একটি মামলায় একই আসামিদের ১৮৭৮ সালের অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১৯ (সি) ও ১৯ (এফ) ধারায় সাত বছর কারাদণ্ড দেন বিচারক। উভয় সাজা একসঙ্গে চলবে বলে বিচারক আদেশে উল্লেখ করেন।
জামায়াতে ইসলামীর আমীর ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী (৮২), বিএনপি নেতা ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর (৫৩) ছাড়াও মৃত্যুদণ্ডাদেশসহ সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন, এনএসআই’র সাবেক দুই প্রধান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী (৬০) ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুর রহিম (৬১), সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার সাহাবুদ্দিন আহমেদ (৫৩), সাবেক উপ-পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন (৪৩), সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন (৪৭), সিইউএফএল’র সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার (৬২) এবং সংস্থাটির সাবেক জিএম (প্রশাসন) একেএম এনামুল হক (৬১), চোরাচালানি হাফিজুর রহমান হাফিজ (৪৮), অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দীন মোহাম্মদ (৪৫), মাছ ধরার নৌকার মালিক হাজী আবদুস সোবহান (৬০), সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব নূরুল আমিন ও উলফা সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়া।
(দ্য রিপোর্ট/এমকে/এমএআর/সা/ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৪)