দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সব ধরনের ভ্যাটের (মূল্য সংযোজন কর) হার ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

সচিবালয়ে মঙ্গলবার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর মালিকদের সংগঠন ‘অ্যাসোসিয়েশন অব টিভি চ্যানেল ওনার্স’ (অ্যাটকো)-এর সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।

সংগঠনের সভাপতি ও এনটিভি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী ফালু, সাধারণ সম্পাদক ও চ্যানেল আই’র বার্তা বিভাগের প্রধান শাইখ সিরাজ, মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক একে আজাদ, চ্যানেল একাত্তরের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অ্যাটকো নেতারা ভ্যাট সংক্রান্ত নানা সমস্যা তুলে ধরার পাশাপাশি ভারতীয় চ্যানেল প্রদর্শনে ভ্যাট আদায় করা, ক্যাবল নেটওয়ার্কে বাংলাদেশের চ্যানেলগুলোর সিরিয়াল প্রথম দিকে রাখা ও বিদেশি সংস্কৃতি নিয়ন্ত্রণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বৈঠকে অ্যাটকো নেতাদের ভ্যাট সংক্রান্ত নানা সমস্যার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ভ্যাট কমানোর সুযোগ নেই। আগামী ২০১৫ সালের মধ্যে সব ধরনের ভ্যাটের হার ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।’

অ্যাটকোর অন্যান্য সমস্যা নিরসনে এনবিআরসহ একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক (তথ্য মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, বিটিআরসি) করা হবে জানিয়ে অ্যাটকোর পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি সমন্বিত প্রস্তাব দেওয়ার পরামর্শ দেন অর্থমন্ত্রী।

এ সময় অনেকগুলো চ্যানেল মার্জার (একীভূত) হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন অর্থমন্ত্রী।

ভ্যাট প্রসঙ্গে অ্যাটাকো নেতারা বলেন, তারা ভ্যাট দিতে চান, কিন্তু ভ্যাট প্রদানে এনবিআর-এর হয়রানি বন্ধ করতে হবে।

তারা জানান, গত ১৫ দিনে ভ্যাট প্রদানের জন্য এনবিআর থেকে তিনবার চিঠি দেওয়া হযেছে। এ ছাড়া গত ১৫ বছরের ফাইল এবং টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে প্রচারিত বিজ্ঞাপনের সিডি চাওয়া হয়েছে। কিন্তু এটা কীভাবে দেওয়া সম্ভব, এগুলো তো সেভাবে সংরক্ষণ করা হয় না।

এ ছাড়া টেলিভিশন শিল্পীরা প্রত্যেকে ব্যক্তিগত আয়কর দিয়ে থাকেন। কিন্তু তাদের প্রোগ্রামের সম্মানী ভাতা থেকেও ভ্যাট আদায় করা হয়। এটা অযৌক্তিক।

মোসাদ্দেক আলী ফালু বলেন, ‘আমাদের দুই জায়গাতে কর সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দিতে হয়। বিজ্ঞাপণের অর্থ পাওয়ার আগেই রাজস্ব বোর্ডকে ভ্যাটের অর্থ পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু এটা কীভাবে সম্ভব?’

শাইখ সিরাজ বলেন, ‘ভারতীয় চ্যানেলগুলো বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে চালু থাকায় আমাদের বিজ্ঞাপনের বাজার ভারতে চলে যাচ্ছে। করপোরেটগুলো ভারতীয় চ্যানেলগুলোকে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে। কিন্তু ভারতে আমাদের কোনো টেলিভিশন চ্যানেল চলে না। আমরা ভারতীয় চ্যানেলের বিপক্ষে না, তবে ভারতীয় চ্যানেল অবাধ হওয়ার কারণে আমাদের সংস্কৃতি হুমকির ‍মুখে। আমাদের সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে এ বিষয়ে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

মোজাম্মেল বাবু বলেন, ‘আমাদের দেশে ২৪টি চ্যানেল সম্প্রচারে আছে। আরও ১৩টি চ্যানেলের লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞাপনের বাজার বাড়েনি। ফলে প্রায় ২০টি চ্যানেল মরে যাবে।’

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এনডিএস/আরকে/ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৪)