মেলা মঞ্চে সেমিনার ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘মমতাজুর রহমান তরফদারের ইতিহাস চর্চায় একাল-সেকাল ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনার। সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পারভীন হাসান। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, সাইফুদ্দীন চৌধুরী, একেএম শাহনেওয়াজ ও মোহাম্মদ সেলিম। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক অজয় রায়।
প্রাবন্ধিক বলেন, ‘মমতাজুর রহমান তরফদার বিশ্বাস করতেন যে ইতিহাস শুধু কিছু ঘটনা কিংবা সন-তারিখ নয়, ইতিহাস আমাদেরকে অতীতের জ্ঞান দ্বারা সমৃদ্ধ করে; যেন আমরা সেই জ্ঞানের আলোকে বর্তমানকে বুঝতে পারি। সমকালীন সমাজ ব্যবস্থায় তিনি সন্তুষ্ট হতে পারেননি, তাই বাঙালিকে তার সার্বিক ঐতিহাসিক পটভূমিতে দাঁড় করিয়ে নিজ জাতীয়তাবাদের উৎসের খোঁজ দিতে চেয়েছেন। দেশপ্রেম দিয়ে সমাজের অসুস্থতা বুঝতে চেষ্টা করেছেন এবং ইতিহাস চর্চার মাধ্যমে দেশবাসীকে তাদের অতীত সম্পর্কে অবগত করাতে চেয়েছেন। যেন অতীতের জ্ঞান তাদের বর্তমানকে আলোকিত করে এবং তারা স্বচ্ছ দৃষ্টিতে সমাজের অসঙ্গতিগুলো অবলোকন করতে পারে। তিনি বলেন, মমতাজুর রহমান তরফদার আন্তধর্মীয় সম্পর্কগুলো বিশেষ করে লোকজ স্তরের অনুসন্ধানও করেছেন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি থেকে।’
আলোচকবৃন্দ বলেন, ‘মমতাজুর রহমান তরফদার ইতিহাসচর্চার এক নতুন পরিকাঠামো গড়ে তোলেন যেখানে রাজন্যবর্গ নয় বরং জনগণই ইতিহাসের কেন্দ্রে স্থাপিত ছিল। আমাদের ইতিহাসের এই ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাখ্যাকার ইতিহাসের তত্ত্বদর্শনেও রেখেছেন মৌলিকত্বের ছাপ। কোনো বিশেষ সম্প্রদায় অথবা গোষ্ঠীর প্রতি তাঁর দুর্বলতা ছিল না, তাই মধ্যযুগের ইতিহাস রচনার ক্ষেত্রে তাঁকে একজন প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষ পণ্ডিত হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। এই ধরনের পাণ্ডিত্য পাকিস্তানের পটভূমিতে বিরল, বিশেষ করে যখন তাঁর অনুসন্ধানের কাল ছিল মুসলিম শাসিত।’
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক অজয় রায় বলেন, ‘আজকের সমাজে মমতাজুর রহমান তরফদারের মতো যুক্তিবাদী উদার ও মানবিক-চিন্তার ইতিহাসবিদের বড়ই অভাব। তাঁকে স্মরণের পাশাপাশি তাঁর অনন্য ইতিহাসচিন্তার দিকেও আমাদের ফিরে তাকাতে হবে।’
সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা : সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ছিল প্রকাশ সাহিত্য সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং শ্রুতিঘরের সদস্যদের আবৃত্তি পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন কণ্ঠশিল্পী লিলি ইসলাম, তপন মাহমুদ, ফাহিম হোসেন চৌধুরী, নীলোৎপল সাধ্য, রোকাইয়া হাসিনা, বদরুন্নেসা ডালিয়া। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বিশ্বজিৎ সরকার (তবলা), গাজী আবদুল হাকিম (বাঁশি), আলমাস আলী (বেহালা), নাজমুল আলম খান (মন্দিরা) এবং সুমন রেজা খান (কী-বোর্ড)।
(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এপি/ এনআই/ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৪)