টিকফার প্রথম বৈঠক ঢাকায়
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত দ্বি-পাক্ষিক ‘টিকফা’ (ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্ট) চুক্তির প্রথম বৈঠক আগামী ৬ এপ্রিল ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।
সচিবালয়ে বুধবার ঢাকাস্থ মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনার সঙ্গে বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, টিকফা বৈঠক উপলক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকায় আসবে। তাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি বিনিয়োগকারীরাও আসবেন। গত ৩০ জানুয়ারির পর থেকেই টিকফা চুক্তি কার্যকর হয়েছে বলে জানান তিনি।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘সম্প্রতি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বালি সম্মেলনে উন্নত দেশগুলোতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর পণ্যের শুল্কমুক্ত ও কোটামুক্ত সুবিধা প্রদানের যে অঙ্গীকার করা হয়েছে টিকফার প্রথম বৈঠকে বিষয়টি সবচেয়ে প্রাধান্য পাবে।’
মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনা অত্যন্ত ফলপ্রসু হয়েছে। বৈঠকে মূলত টিকফা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ ছাড়া জিএসপি সুবিধা ও বালি প্যাকেজ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’
জিএসপি সুবিধা প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে খুব আশাবাদী যে, জিএসপি সুবিধা তারা যেটা স্থগিত করেছে, সেটা আবার ফিরে পাবো। এ সংক্রান্ত যে সব শর্ত দেওয়া হয়েছিল সেগুলোর অনেকগুলোই আমরা ইতোমধ্যে পূরণ করেছি। বাকি শর্তগুলো আগামী এপ্রিলের মধ্যে পূরণ করতে সক্ষম হবো।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি বাণিজ্য সচিব, পররাষ্ট্র সচিব ও শ্রম সচিবের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’
‘টিকফার সঙ্গে জিএসপির কোনও কানেকশন নেই’- এমন মন্তব্য করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র অনেক দেশেরই জিএসপি সুবিধা স্থগিত করেছে, বাংলাদেশেরও করেছে। অন্যদেরটা অন্য কারণে, বাংলাদেশেরটা ভিন্ন কারণে।’
প্রসঙ্গ : সংলাপ
তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া সংলাপ নিয়ে কথা হয়েছে। আমরা সংলাপের বিরুদ্ধে নই। কিন্তু বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৯ দলীয় জোট যখন একটি সরকারকে অবৈধ বলে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করে, তখন তো সংলাপের সুযোগ থাকে না।’
‘সংলাপ নিয়ে কোনও চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে কি না’- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কোন চাপ নেই। একটা কথা খুবই পরিষ্কার যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের ওপরে বিদেশী কোনও দেশের চাপ নেই। কারণ বিভিন্ন দেশ ইতোমধ্যে উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, নির্বাচন করার বিকল্প আমাদের কিছুই ছিল না। নির্বাচন আমাদের করতেই হতো এবং সংবিধান মোতাবেকই আমরা নির্বাচন করেছি। যার জন্য পৃথিবীর প্রায় সব দেশই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারকে অভিনন্দন জানিয়েছে।’
‘সংলাপ কবে হতে পারে বা শিগগিরই সংলাপের কোনও সম্ভাবনা আছে কি না’- জানতে চাইলে তোফায়েল বলেন, ‘এটা বলা খুবই মুশকিল। আমরা কেউই সংলাপের বিরুদ্ধে নই। সংলাপ হতেই পারে। কিন্তু কখন ও কবে এটা হবে তা কেউ বলতে পারবে না।’
‘অনন্তকাল অপেক্ষা করা হবে না’- বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার এ বক্তব্যের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘তারা তো নির্বাচনের আগেও অপেক্ষা করেননি। তাদের সমস্ত শক্তি যা ছিল তা নিয়োগ করেছিলেন নির্বাচনকে বানচাল ও বন্ধ করার জন্য। সেটা যখন সফল হয়নি এবং আগামী দিনেও এ সব করে যে সফল হওয়া যাবে না; আমার মনে হয়, মুখে তারা যা-ই বলেন না কেন, এটা তারা হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে পেরেছেন। এভাবে রাজপথে হানাহানি করে, হরতাল দিয়ে, অবরোধ সৃষ্টি করে, চলন্ত বাসে আগুন দিয়ে তাদের যে কোন লাভ হয়নি, এটা তারা বুঝতে শুরু করেছেন।’
(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এমএআর/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৪)