‘সুদখোরদের হাত থেকে দরিদ্রদের মুক্তি দিতে চাই’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সকল সুদখোর ও দাদন ব্যবসায়ীদের হাত থেকে মুক্তি দিতে এবং তাদের কৃষিভিত্তিক জীবিকায়ন নিশ্চিত করতে চাই।’
দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে বুধবার প্রশ্নোত্তর পর্বে স্বতন্ত্র সদস্য হাজী মো. সেলিমের এক প্রশ্নে উত্তরে একথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথম পর্যায়ে ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত দেশের ৬৪ জেলার ৪৮৫টি উপজেলায় একযোগে একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। গত তিন বছর যাবৎ এ প্রকল্পের অধীনে দেশের প্রতিটি উপজেলায় ৪টি ইউনিয়নে সকল ওয়ার্ডে একটি করে ৩৬টি গ্রাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, এতে দেশের মোট ১০ লাখ ৩৮ হাজার দরিদ্র পরিবার সরাসরি উপকৃত হচ্ছে। এসব পরিবারের বাৎসরিক আয় ১০ হাজার ৯২১ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রতিটি গ্রামে তাদের নিজস্ব তহবিল গড়ে উঠেছে নয় থেকে ১০ লাখ টাকা।’
প্রকল্পটি শতভাগ সফল দাবি করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জীবিকায়ন ও দারিদ্র বিমোচনে এই প্রকল্পে উপকারভোগী পরিবারের নিজস্ব মূলধন গড়ে উঠেছে এক হাজার তিনশ ৪৪ কোটি টাকা। এ টাকার তিনভাগের একভাগ অর্থ্যাৎ ৪৪৮ কোটি টাকা তারা ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে গড়ে তুলেছে, সরকার দিয়েছে তার দ্বিগুণ অর্থ্যাৎ ৮৯৬ কোটি টাকা। এ টাকা দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর নিজস্ব ব্যাংক হিসাবে জমা আছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটি বাড়ি একটি খামার কর্মসূচিকে স্থায়ীরূপ দিতে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য ‘পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক’ সৃজন করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাংক একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক হিসেবে সম্পূর্ণ দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ক্ষুদ্র সঞ্চয় জমার রাখার একটি ব্যাংক হবে যা তাদের সঞ্চয়, বিনিয়োগ ও আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।’
মো. ফরিদুল হক খানের এক প্রশ্নের উত্তরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদ-ফুলছড়ি ঘাটে প্রধানত ভারতীয় রাষ্ট্রীয় ঋণে রেলসেতু নির্মাণের সার-সংক্ষেপ আমি ২০১১ সালের ১৫ জানুয়ারি অনুমোদন করেছি। তবে প্রকল্প ব্যয় অত্যধিক হওয়ায় অর্থায়নের সীমাবদ্ধতার কারণে প্রকল্পটি ভারতীয় রাষ্ট্রীয় ঋণের আওতায় গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) আওতায় প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে একটি প্রস্তাবনা ২০১৩ সালের ১৪ আগস্ট অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে নীতিগত অনুমোদন লাভ করেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের সাব-রিজিওনাল রেল ট্রান্সপোর্ট প্রিপারেটরী সহায়তার জন্য কারিগরি সহায়তা’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় স্ট্যাডিরত সাতটি প্রকল্পের একটি হিসেবে বাহাদুরাবাদ-ফুলছড়ি ঘাটে যমুনা নদীর ওপর এ্যাপ্রোচ রেললিংকসহ রেলসেতু নির্মাণের সম্ভব্যতা সমীক্ষা চলমান আছে। ২০১২ সালের ১০ নভেম্বর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান সমীক্ষার কাজ শুরু করে। সেতুটি নির্মাণের জন্য সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা।’
(দ্য রিপোর্ট/আরএইচ-এইচআর/জেএম/ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১৪)