মেট্রোরেলের পরামর্শক নিয়োগের প্রস্তাব ক্রয় কমিটিতে
দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লাইন-৬ (মেট্রোরেল) প্রকল্পের নকশা, নির্মাণ কাজ তদারকি, ক্রয় সহযোগিতা ও ব্যবস্থাপনা কাজের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উঠছে। সোমবার দুপুরে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে সচিবালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রকল্পের (প্যাকেজ এস-০১) পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ পেতে যাচ্ছে জাপানের নিপ্পন কয়েই কোম্পানি লিমিটেডের নেতৃত্বে গঠিত কনসোর্টিয়াম। এতে ব্যয় হবে ভ্যাট ও ট্যাক্সসহ ৯২৮ কোটি ১৭ লাখ ২৬ হাজার টাকা।
যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্মাণপূর্ব, নির্মাণকালীন ও নির্মাণ পরবর্তী সময়ে সেবা দেবে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান। এটি নিয়োগের জন্য গত বছরের ১৯ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সাতটি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) জমা দেয়। প্রয়োজনীয় অভিজ্ঞতা না থাকায় চারটি প্রতিষ্ঠান অযোগ্য বিবেচিত হয়।
জাইকার নির্দেশনা অনুযায়ী, সড়ক বিভাগের প্রস্তাব মূল্যায়ন কমিটি (পিইসি) তিনটি প্রতিষ্ঠানকে সংক্ষিপ্ত তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করে। এ তিনটি প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ফ্রান্সের সিস্ট্রা এসএ, জাপানের ওরিয়েন্টাল কনসালটেন্ট কোম্পানি ও জাপানের নিপ্পন কয়েই কোম্পানি লিমিটেড।
সর্বশেষ গত ৩ সেপ্টেম্বর পিইসি কারিগরি মূল্যায়ন চূড়ান্ত করে। এতে নিপ্পন ১০০ নম্বরের মধ্যে ৮৯ দশমিক ৪৯৬ পেয়ে প্রথম হয়।
প্রস্তাবের সার-সংক্ষেপ থেকে জানা গেছে, মেট্রোরেল প্রকল্পের আওতায় মূলত ২০ দশমিক এক কিলোমিটার এলিভেটেড রেল ট্র্যাক, ১৬টি স্টেশন, একটি ডিপো নির্মাণ এবং ২৪টি রোলিং স্টক কেনা হবে।
কয়েক দফা সংশোধনের পর গত মাসে মেট্রোরেলের রুট চূড়ান্ত হয়। মেট্রোরেল উত্তরা তৃতীয় ফেইজ থেকে শুরু হয়ে পল্লবী-রোকেয়া সরণির পশ্চিম পাশ দিয়ে খামারবাড়ী হয়ে ফার্মগেট-হোটেল সোনারগাঁ-শাহবাগ-টিএসটি-দোয়েল চত্ত্বর-তোপখানা রোড হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত। মূল রুট নির্মাণের পর পরবর্তীতে এটি বাংলাদেশ ব্যাংক-অতীশ দীপঙ্কর রোড হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত বর্ধিত হবে।
ঢাকা মহানগী ও এর পাশ্ববর্তী এলাকার পরিবহন ব্যবস্থাকে সুষ্ঠু, পরিকল্পিত ও আধুনিকায়নের জন্য ২০ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনার সুপারিশের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে জাইকা ২০০৯-১০ সালের দিকে একটি প্রাথমিক সমীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ সমীক্ষায় মেট্রোরেল প্রকল্পকে অগ্রাধিকার প্রকল্প হিসেবে সুপারিশ করে জাইকা।
প্রকল্পটি ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর একনেক সভায় অনুমোদিত হয়। এর প্রাক্কলিত ব্যয় ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৫ হাজার ৩৯০ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। বাংলাদেশ সরকার ও জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) অর্থায়নে প্রকল্পটি ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) বাস্তবায়ন করছে। শতভাগ সরকারি মালিকানাধীন ‘ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)’ নামে একটি কোম্পানি মেট্রোরেল পরিচালনা, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে।
(দিরিপোর্ট২৪/আরএমএম/জেএম/নভেম্বর ০৪, ২০১৩)