বেনাপোল (যশোর) সংবাদদাতা : দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল কাস্টম হাউসে চলতি ২০১৩-১৪ অর্থ বছরের প্রথম সাত মাসে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে।

সাত মাসে রাজস্ব আদায় হয় ১২৬৪ কোটি টাকা। আর লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১,৩২৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। গত অর্থ বছরের (২০১২-১৩) একই সময়ে ২৪৮.৭১ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় কম হয়েছিল।

২০১২-২০১৩ অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১,৪৭০ কোটি ৩০ লাখ টাকা। আদায় হয়েছিল ১২২১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা।

কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বেনাপোল কাস্টম হাউসে ২০১৩-১৪ অর্থ বছরের জুলাই মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করে ১৮৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আদায় হয়েছে ২৪০ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগস্ট মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। আদায় হয়েছে ১৩৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা। সেখানে রাজস্ব আদায় হয় ২১৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। অক্টোবর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯৮ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৬৮ কোটি ৫ লাখ টাকা। নভেম্বর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৬১ কোটি ১০ লাখ টাকা। আর ডিসেম্বর মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮৭ কোটি ৯০ লাখ টাকা। সেখানে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৪৬ কোটি ৬১ লাখ টাকা।

২০১৪ এর জানুয়ারি মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৯১ কোটি ১ লাখ টাকা।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যসোসিয়েশনের কাস্টম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব নাসির উদ্দিন জানান, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়েই সম্পন্ন হচ্ছে ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যের সর্ববৃহৎ অংশ। সরকার বছরে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করছে এই বন্দর থেকে। অথচ কেউ বন্দরের অবকাঠামো ও পরিকাঠামোগত বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা নিরসন করতে উদ্যোগ নিচ্ছেন না। দীর্ঘদিনের বিরাজমান সমস্যাগুলোর কারণে ব্যবসায়ীরা ও বন্দর ব্যবহারকারীরা প্রতিদিন হয়রানি ও নানামুখি অসুবিধার সম্মুখিন হচ্ছেন। কিন্তু একের পর এক ধর্মঘট, হরতাল ও অবরোধের পাশাপাশি বন্ডের মাধ্যমে মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে মাল ছাড়ার কারণে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল আবারও রাজস্ব ঘাটতির দিকে যাচ্ছে।

এ ছাড়া বন্দর থেকে অব্যাহত পণ্য চুরির ঘটনায় অনেক আমদানিকারক এ বন্দর ছেড়ে অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছে। বন্দর কর্তৃপক্ষ পণ্য চুরি রোধে কোনও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না।

এ ব্যাপারে বেনাপোল কাস্টমসের যুগ্ম কমিশনার-১ ফাইজুর রহমান জানান, চলতি অর্থবছরের জুলাই ও সেপ্টেম্বর মাসে আমাদের গাড়ি আমদানি বেশি হয়েছে। এ ছাড়া উচ্চ শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি হবার কারণে এই দু-মাসে আমাদের রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা বেশি হলেও আগস্ট, অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। বিরোধী দলের অবরোধ, হরতাল, রাজনৈতিক অস্থিরতা, ভারতে আন্দোলন, শ্রমিক ধর্মঘট, লিংক সমস্যা ও সীমান্ত পথে আমদানি যোগ্য পণ্য পাচার বেড়ে যাওয়ায় রাজস্ব ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে।

আগামী মাসে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের বেধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হতে পারে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

(দ্য রিপোর্ট/জেএইচ/এমএআর/ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৪)