যশোর অফিস : দশ দিনেও খোঁজ মেলেনি যশোর জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ফয়সাল খানের। গত ২৮ জানুয়ারি রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে একটি মাইক্রোবাসে তাকে তুলে নিয়ে যায় অজ্ঞাত ব্যক্তিরা।

নিখোঁজ ফয়সালের বিরুদ্ধে খুনসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। অনেক শত্রু থাকায় তার পরিণতি নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন ফয়সালের পরিবার ও ছাত্রলীগ নেতারা।

যশোর পুলিশ বলছে, ঘটনাস্থল রাজধানীর শাহবাগ থানায় হওয়ায় সেখানকার পুলিশই ফয়সালকে উদ্ধারে ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি কাজ করছে যশোর পুলিশও।

গত ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় যশোর শহরের ঘোপ এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হয় যুবলীগের নেতা রফিকুল ইসলাম শিপন। ওই হত্যাকাণ্ডে ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল খান জড়িত অভিযোগে তার বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিতে ফয়সাল খান গত ২৮ জানুয়ারি ঢাকা যান। হাইকোর্টে যাওয়ার পথে বেলা ২টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে একটি সাদা মাইক্রোবাসের আরোহীরা তাকে টেনেহিঁচড়ে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়।

ফয়সাল খানের পরিবার প্রথমে ধারণা করেছিল, মামলার আসামি হিসেবে গোয়েন্দা পুলিশ তাকে আটক করে নিয়ে গেছে। সে অনুযায়ী তারা পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু পুলিশের কোনও বিভাগ থেকে ফয়সালকে আটকের কথা স্বীকার করা হয়নি। পরিবারের ধারণা, বিভিন্ন ব্যক্তি ও গ্রুপের সঙ্গে বিরোধের কারণে তাকে অপহরণ করে গুম করা হতে পারে।

যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সুখেন মজুমদার জানান, নিখোঁজের পর থেকে ফয়সালের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। ফয়সালের মা পিনু বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ছেলের চিন্তায় তারা এখন দিশেহারা।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, নিখোঁজ ফয়সাল খানের বিরুদ্ধে যুবলীগ নেতা শিপন হত্যা ছাড়াও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বহু অভিযোগ রয়েছে। ফেনসিডিলের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়েও ছাত্রলীগের একটি গ্রুপের সঙ্গে তার বিরোধ রয়েছে। শহরের কেন্দ্রস্থল দড়াটানায় জায়গা দখল ও সরকারি গাছ কাটার সঙ্গেও তার জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে, ফয়সাল খানকে উদ্ধারের দাবিতে যশোর জেলা ছাত্রলীগ মিছিল-মিটিং করেছে। কিন্তু কোনও ফল মেলেনি।

জানতে চাইলে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ বলেন, ‘ফয়সাল নিখোঁজের ব্যাপারে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। ফলে তাকে উদ্ধারের মূল দায়িত্ব শাহবাগ থানার। যশোর কোতোয়ালি পুলিশ এ ব্যাপারে শাহবাগ থানার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।’

যশোর পুলিশের মুখপাত্র সদর সার্কেল এএসপি রেশমা শারমিন বলেন, নিখোঁজ ফয়সালের মোবাইল ফোন ট্রাকিংয়ের মাধ্যমে তার হদিস মেলানোর চেষ্টা চলছে। তবে এখানও সফল হওয়া যায়নি।

(দ্য রিপোর্ট/একে/এমএআর/আরকে/ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৪)