সিঙ্গাইরে অন্তর্কোন্দলে বিএনপি, আ’লীগের অবস্থান সুবিধাজনক
মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা : মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে অন্তর্কোন্দলে পুড়ছে বিএনপি। উপজেলা নির্বাচনে দুই গ্রুপ ঐকমত্য হয়ে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে মনোনয়ন নিয়ে দলীয় বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে।
এদিকে বিএনপি অধ্যুষিত এ উপজেলায় আওয়ামী লীগ বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে।
উপজেলা নির্বাচনে দুই প্রার্থী নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। এক গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্ত ও আরেক অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মোজাহারুল হক মহর।
জেলা জাসাসের যুগ্ম-আহ্বায়ক খান মোহাম্মদ রুমীকে দলের একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে উপজেলা যুবদল ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবিদুর রহমান খান রোমান দলের একাংশের নেতাকর্মী নিয়ে নির্বাচনের প্রচারণা চালাচ্ছেন। তাকে সমর্থন জানিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মোজাহারুল হক মহরসহ বেশ কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মঈনুল ইসলাম খান শান্ত বলেন, ‘দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে খান মোহাম্মদ রুমীকে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। যারা দলের সিদ্ধান্ত মানবেন না, তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যিনি (রোমান) দাঁড়িয়েছেন তিনি দল থেকে বহিষ্কৃত। তিনি দলের কেউ নন। এখানে বিএনপির একজনই প্রার্থী। তিনি হলেন খান মোহাম্মদ রুমী।’
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মোজাহারুল হক মহর বলেন, ‘মঈনুল ইসলাম খান শান্ত দলের ত্যাগী তৃণমূল নেতাদের মতামত উপেক্ষা করে এমন একজনকে মনোনয়ন দিয়েছেন যিনি কোনোদিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র নির্বাচন করে জামানত হারিয়েছেন। এ ছাড়াও নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে মহাজোট প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচন করেছেন তিনি। দলের অধিকাংশ নেতাকর্মী রোমানের পক্ষে কাজ করছেন। তার বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না।’
আবিদুর রহমান খান রোমান বলেন, ‘কেন্দ্রের নির্দেশ অনুযায়ী থানা, পৌরসভা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের ভোটের মাধ্যমে প্রার্থী নির্ধারণ করার কথা। কিন্তু মঈনুল ইসলাম খান শান্ত তার অনুসারীদের নিয়ে সভা করে তার সিদ্ধান্ত নেতাকর্মীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন। সভায় নেতাকর্মীদের মতামত প্রকাশ করারও সুযোগ দেওয়া হয়নি। দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মী ও জনমত আমার পক্ষেই আছে। আমি নির্বাচন করবই।’
খান মোহাম্মদ রুমী বলেন, ‘আন্দেলন সংগ্রাম ও বিপদে আপদে সব সময় দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলাম। তাই দল আমাকে সমর্থন দিয়েছে। তৃণমূল নেতাকর্মীরাও আমাকে চাচ্ছেন।’
এ উপজেলাটি বিএনপি অধ্যুষিত। মনোনয়ন নিয়ে দলের দীর্ঘদিনের বিরোধ চরম আকার ধারণ করেছে। দুই গ্রুপ ঐকমত্য হয়ে প্রার্থী দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তৃণমূল নেতারা দলের শীর্ষ নেতাদের প্রতি বিষোদগার ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ থেকে বর্তমান চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান খান হান্নান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মাজেদ খানের ছেলে ফয়জুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগ বর্ধিত সভা করে নেতাকর্মীদের সর্বসম্মতিক্রমে মুশফিকুর রহমান খান হান্নানকে দলের একক প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এ সিদ্ধান্ত মেনে নিয়ে ফয়জুল ইসলাম তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে দলের মনোনীত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। এতে বেশ সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে আওয়ামী লীগ।
(দ্য রিপোর্ট/এনইউ/ইইউ/শাহ/ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৪)