সাতক্ষীরায় বিএনপি-জামায়াত নেতাদের নামে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা জামায়াতের সেক্রেটারিসহ ১৬ বিএনপি-জামায়াত নেতার নামে রাষ্ট্রদ্রোহিতার মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইনামুল হক শুক্রবার দ্য রিপোর্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ‘রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করতে এজাহার প্রস্তুত করে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। মন্ত্রণালয় মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে মামলা রেকর্ডের জন্য পুলিশ বিভাগকে নির্দেশ দিলে এটি নথিভুক্ত করা হয়।’
সাতক্ষীরা সদর থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) আসাদুল ইসলাম গত বছরের ২৭ নভেম্বর মামলাটি রেকর্ড করার জন্য জেলা পুলিশের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন।
পরে মামলাটি রেকর্ডে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রাষ্ট্রপতির অনুমতি প্রাপ্তিসাপেক্ষে ৪ ফেব্রুয়ারি সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইনামুল হক রেকর্ড করেন। মামলা নং-১৪।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সাতক্ষীরা সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবুল কাসেমকে।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, গত বছরের ২৬ নভেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে এসআই আসাদুল ইসলামসহ সঙ্গীয় ফোর্স শহর উপকণ্ঠের বাঁকাল এলাকায় কর্মরত ছিলেন। সে সময় গোপন সংবাদে তারা জানতে পারেন, আলিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফের বাড়িতে জ্ঞাত সকল আসামিসহ অজ্ঞাত আরও ১০/১২ জন বর্তমান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করছে। তারা দেশের প্রচলিত আইন উপেক্ষা করে দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করার, দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো ধ্বংস করার পাশাপাশি প্রশাসনিক কার্যকলাপ বন্ধ করে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সরকারের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর মহাপরিকল্পনা করছে। এ সব ঘটনার পরিকল্পনাকারী আলিপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা আব্দুর রউফের বাড়িতে বসে ষড়যন্ত্র চলাকালীন এসআই আসাদুল ইসলামসহ সঙ্গীয় ফোর্স ওই স্থানে হানা দিয়ে আব্দুর রউফকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় সেখান থেকে কয়েকজন পালিয়ে যায়।
মামলার আসামিরা হলেন- আলিপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলী, সদর উপজেলার ফিংড়ি ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুর রহমান, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি নুরুল হুদা, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা রফিকুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের সাবেক প্রচার সম্পাদক আলতাফ হোসেন, সদরের ৩ নং বৈকারি ইউপি চেয়ারম্যান শহিদ হাসান, পৌর বিএনপির সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, সাবেক এমপি মাওলানা আব্দুল খালেক মন্ডলের ছেলে বুলবুল, জাসাসের জেলা সভাপতি অ্যাডভোকেট এখলেছার আলী বাচ্চু, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আহাদুজ্জামান, জেলা জামায়াতের সহকারি সেক্রেটারি এডভোকেট আজিজুর রহমান, জেলা জামায়াত সদস্য এডভোকেট মুকুল, পৌর আমির মো. ওবায়দুল্লাহ, জামায়াত নেতা জামসেদ আলম, আয়েনউদ্দীন মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক ও দৈনিক সংগ্রামের জেলা প্রতিনিধি আবু সাঈদ বিশ্বাস ও জেলা জামায়াতের ইউনিট সদস্য জহিরুল ইসলাম ওরফে টেক্কা খান।
মামলায় অজ্ঞাত ১০/১২ আসামি রয়েছেন। তারা সকলেই রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে দণ্ডবিধি ১২০ এর খ ও ১২৪ এর ক পেনালকোড ধারা মোতাবেক সরকারের বিরুদ্ধে অপরাধজনক ষড়যন্ত্র ও রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ ও সাংবাদিক আবু সাঈদ বিশ্বাস কারাগারে অন্তরীণ আছেন। তাদের ইতোমধ্যে এ মামলায় শোন অ্যারেস্ট দেখানো হয়েছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা আবুল কাসেম।
(দ্য রিপোর্ট/এমআরইউ/এমএআর/এনআই/ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৪)