দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মুক্তিযুদ্ধের পর ক্ষমতার পালাবদলে দুর্নীতি-সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মীয়-জাতিগত জঙ্গিবাদকে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়েছে। যা মহান মুক্তিযুদ্ধের গণমুখী-প্রগতিশীল চেতনার সঙ্গে সরাসরি সাংঘর্ষিক। একুশে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত ‘গণতন্ত্রের তিন শত্রু : দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয়/জাতিগত জঙ্গিবাদ এবং গণতন্ত্র ও সুশাসনের তিন শত্রু : দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয়/জাতিগত জঙ্গিবাদ’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে শুক্রবার বিকেলে বক্তারা এ সব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, এই তিন শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অর্জন সামান্য নয়। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য তথ্য অধিকার আইন ও তথ্য কমিশন গঠন একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। তবে দুর্নীতিবিরোধী লড়াইকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে অবিলম্বে ন্যায়পাল গঠন করা জরুরি। সঙ্গে সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে শুধু আইনগত ব্যবস্থা নয়, আমাদের মানসকাঠামোর আমূল পরিবর্তনও প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে পৃথক দু’টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ ও মাসুদা ভাট্টি। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, মোহাম্মদ এ আরাফাত। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর।

প্রাবন্ধিকদ্বয় বলেন, দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মীয়-জাতিগত জঙ্গিবাদ বাংলাদেশের শান্তি-স্থিতিশীলতা ও অগ্রগতির মূল শত্রু। এই তিন শত্রুর অবাধ বিচরণভূমি পাকিস্তানি রাষ্ট্রকাঠামোর বিরুদ্ধে রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। কিন্তু স্বাধীন বাংলাদেশেও আমরা এই শত্রুত্রয়ের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত হইনি। দ্রুত এ অবস্থার অবসান না হলে জাতি হিসেবে আমরা ব্যর্থতার খাতায় নাম লেখাতে বাধ্য হব। তাই জাতি ও রাষ্ট্র হিসেবে বিজয়ী হতে এই শত্রুপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজয় ছাড়া আমাদের আর কোনো বিকল্প নেই।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর বলেন, ‘দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয়-জাতিগত জঙ্গিবাদ গোটা রাষ্ট্রের অগ্রগতি ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে প্রয়োজন সর্বস্তরের নাগরিকের শুভ বুদ্ধির উদয় ও সমাজ-রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে কার্যকর গণতন্ত্রায়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা।’

(দ্য রিপোর্ট/জেএইচ/এসকে/এনআই/ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৪)