‘বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে’
রাজশাহী সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জনসমর্থণ না থাকায় বিএনপি-জামায়াতের সব আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে।
শনিবার সকালে রাজশাহী সারদা পুলিশ একাডেমি প্যারেড গ্রাউন্ডে ৩১তম বিসিএস ব্যাচের ১৭৬ জন শিক্ষানবিস সহকারী পুলিশ সুপারদের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল করতে বিএনপি ও তাদের দেশি-বিদেশি প্রভু, লবিস্ট, সুবিধাভোগী গোষ্ঠী এবং পেশাদার বুদ্ধিজীবীদের নানামুখী চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। জনগণ স্বতঃর্স্ফূতভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। গণতন্ত্র ও সংবিধান সমুন্নত রেখেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, গণতন্ত্র ও মুক্তিযদ্ধের চেতনাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক বিএনপি, জামায়াত-শিবির ও তাদের দোসররা দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে সহিংসতা চালিয়েছে। পেট্রোলবোমা মেরে মানুষকে পুড়িয়ে মেরেছে। যানবাহন ও রেললাইন ধ্বংস করেছে। জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের ধারা রক্ষা করতে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সমুন্নত রাখতে জনগণ আবারও আমাদের ওপর আস্থা স্থাপন করেছে। আমরা এখন উন্নয়নের পরবর্তী ধাপ বাস্তবায়ন শুরু করেছি। নির্বাচনী ইশতেহারে এই উন্নয়ন পরিকল্পনা জাতির সামনে তুলে ধরেছি।
তিনি বলেন, গত এক বছরে বিএনপি-জামায়াতের তাণ্ডবে ১৫ জন পুলিশ সদস্য মারা গেছেন। প্রায় ৩ হাজার সদস্য আহত হয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগ জাতি স্মরণ করবে।
শেখ হাসিনা বলেন, নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের সহিংসতা দমনে পুলিশসহ যৌথবাহিনী তৎপর ছিল। তারপরও এই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দির আক্রমণ করেছে। এই জঙ্গি সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে সরকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এক্ষেত্রে পুলিশ সদস্যদের পেশাগত দক্ষতা, নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার পাশাপাশি জনগণের প্রতি সুশীল আচরণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রধানমন্ত্রী পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, মনে রাখতে হবে আপনাদের কাছে বিপদগ্রস্ত মানুষ আসে সাহায্যের আশায়। থানা, তদন্ত কেন্দ্রে, ফাঁড়ি, পুলিশ বক্স এবং পুলিশের অন্যান্য দফতরে আসা মানুষ যেন হয়রানি বা দুর্ভোগের শিকার না হয়, তা নিশ্চিত করে সেবা প্রদান করতে হবে।
তিনি বলেন, সমাজে নারী, শিশু ও প্রবীণদের প্রতি সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে। জনগণের সমস্যাকে একান্ত আন্তরিক ও মানবিক দৃষ্টিকোন থেকে দেখতে হবে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন করতে হবে।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে অভিবাদন গ্রহণ, প্যারেড পরিদর্শন ও বিভিন্ন বিষয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী সহকারী পুলিশ সুপারদের মধ্যে পদক প্রদান এবং পুলিশ একাডেমির অফিসার্স মেস প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ করেন।
এ সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, পুলিশের আইজি হাসান মামুদ খন্দকার ও রাজশাহী সারদা পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপ্যাল নাঈম আহম্মেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকেল সোয়া ৪টায় সরদহ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে একযোগে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার আশ্রয়ন প্রকল্প-২, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকচার ভবন, রাজশাহী সরকারি কলেজের ১০০ শয্যাবিশিষ্ট ছাত্রীনিবাস, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সার্ভে ইনস্টিটিউটের ভৌত সুবিধাদি বর্ধিতকরণ প্রকল্প, রাজশাহী (উত্তর) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়, দুর্গাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, দুর্গাপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন, পুঠিয়া, পবা ও মোহনপুর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিকেল সাড়ে ৪টায় প্রধানমন্ত্রী সরদহ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেবেন। সেখানে তিনি জামায়াত-শিবির এবং বিএনপির সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ৭৭ জনকে সহায়তার চেক প্রদান করবেন। এতে ছাত্রলীগের ১৫ নেতাকর্মীর পাশাপাশি মহানগরের ৭ জন, চারঘাট উপজেলার ১২ জন, বাঘা উপজেলার ১৩ ও পবার ৩০ জন রয়েছেন।
(দ্য রিপোর্ট/এমএইচজে/এসবি/শাহ/ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৪)