জোসনা জামান, দ্য রিপোর্ট : বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে সরকারের প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা ঋণ চুক্তি হচ্ছে। মানসম্মত উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিতকরণ প্রকল্প বাস্তবায়নে অতিরিক্ত হিসাবে এ টাকা দিচ্ছে সংস্থাটি।

আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি এ স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হবে। এতে সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব মোহাম্মদ মেছবাহ উদ্দিন আহমেদ এবং বিশ্বব্যাংকের পক্ষে কান্ট্রি ডিরেক্টর ইউহানেন্স জাট স্বাক্ষর করবেন বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে ঢাকায় নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের যোগাযোগ কর্মকর্তা মেহেরিন এ মাহবুব দ্য রিপোর্টকে বলেন, আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হবে। সহজ শর্তের ঋণের এ অর্থ ব্যয় করার মধ্যদিয়ে দেশের উচ্চ শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রকল্পটি আরও বেশি ভূমিকা রাখতে পারবে বলে আশা করছি।

সূত্র জানায়, এর আগে দশম জাতীয় নির্বাচনের কারণে একনেক স্থগিত থাকায় প্রকল্পটির তৃতীয় সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দেরি হওয়ায় বাস্তবায়ন কাজ ও বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। কেননা গত ডিসেম্বর মাসেই এটির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে সময়মতো অনুমোদন না হওয়ায় প্রকল্পটির বাস্তবায়ন ও ঋণ দুটোই থমকে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল পরিকল্পনা কমিশন। কিন্তু চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে সে আশঙ্কা পুরোপুরি কেটে যাচ্ছে।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্রে জানা গেছে, হায়ার এডুকেশন কোয়ালিটি এনহান্সমেন্ট প্রজেক্ট (এইচইকিউইপি) নামের এ প্রকল্পটিতে শুরু থেকেই বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করে আসছিল। এটির সফল বাস্তবায়নের জন্য অতিরিক্ত প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা (১২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার) দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে নেগোসিয়েশন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু জাতীয় নির্বাচনের কারণে একনেক স্থগিত থাকায় এ প্রকল্পটি অনুমোদন না হওয়ায় ঋণ চুক্তিসহ অন্য প্রক্রিয়া কিছুটা বাঁধাগ্রস্ত হয়।

সহজ শর্তেও এ ঋণ পরিশোধের সময়সীমা ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ মোট ৪০ বছর। এক্ষেত্রে বার্ষিক সার্ভিস চার্জ শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ এবং কমিটমেন্ট ফি শতকরা দশমিক ৫ শূন্য শতাংশ।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় মূল প্রকল্পটির মোট ব্যয় ৬৮১ কোটি ৪ লাখ টাকা (এর মধ্যে সরকারি তহবিলের ৮২ কোটি ৫৬ লাখ এবং বিশ্বব্যাংকের ৫৯৮ কোটি ৪৮ লাখ) ব্যয় ধরা হয়েছিল। বাস্তবায়নের সময় ছিল ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

প্রকল্পটি ২০০৮ সালের ২৩ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে প্রথম অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর জনবল সংখ্যা পরিবর্তন ও কয়েকটি নতুন অঙ্গ যোগ হওয়ায় ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনী করা হয়। ২০১১ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত একনেক সভায় এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।

পরবর্তীতে ডলার বিনিময় হারের পরিবর্তনের কারণে প্রকল্প ব্যয় ও বাস্তবায়নের মেয়াদ বাড়িয়ে দ্বিতীয় সংশোধন করা হয়। এ সময় ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৭৫২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সেই সঙ্গে মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়। ২০১৩ সালের ৭ মে এ প্রস্তাব একনেকে অনুমোদন লাভ করে। এ প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের ঋণ ছিল ৮ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। বর্তমানে বিশ্বব্যাংক ১২ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার অর্থায়নে রাজি হয়। এ জন্য এটির তৃতীয় সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়। সম্প্রতি এ প্রস্তাব অনুমোদন দেয় একনেক।

(দ্য রিপোর্ট/জেজে/এসবি/আরকে/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০১৪)