দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) পরিবর্তনের পথে ৩ পরাশক্তি যে প্রস্তাব দিয়েছিল তাই ভোটের মাধ্যমে শনিবার চূড়ান্ত হয়েছে। সভায় প্রস্তাবের পক্ষে প্রয়োজনীয় ভোট পাওয়ায় প্রশাসনিক, প্রতিযোগিতা ও আর্থিক কাঠামো পরিবর্তন হচ্ছে। সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত আইসিসির গুরুত্বপূর্ণ সভায় পূর্ণ সদস্যদের মধ্যে শুধু শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট এবং পিসিবি ভোট কার্যক্রমে অংশ নেয়নি। বাকি ৮টি পূর্ণ সদস্য ভোটাভুটিতে সরাসরি অংশ নিয়েছে।

আগে দক্ষিণ আফ্রিকা এই প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিলে শেষ পর্যন্ত তারা পক্ষে ভোট দিয়েছে। নিচু সারির বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ে আগে থেকেই ওই প্রস্তাবের পক্ষ নিয়েছিল। বিশেষ করে ৩ পরাশক্তির খসড়া প্রস্তাব থেকে দ্বি-স্তরবিশিষ্ট টেস্ট ক্রিকেট বাদ দেওয়ায় বাংলাদেশের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। সভা নিয়ে যে যুদ্ধ যুদ্ধ লড়াই শুরু হয়েছিল; তাতে ৩ পরাশক্তিই বিজয়ী।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আইসিসির নতুন নির্বাহী কমিটির সদস্য সংখ্যা হবে ৫। যেখানে ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি নিশ্চিত থাকবে। বাকি ২টি সদস্যপদ হাত বদল হবে। উঠে আসবে বাকি ৭টি টেস্ট খেলুড়ে দেশ থেকে। নতুন পরিকাঠামো অনুযায়ী এই কমিটিই আইসিসির নীতিনির্ধারণী গ্রুপ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে।

সভায় আরও কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট এন শ্রীনিবাসন চলতি বছরের জুলাইয়ে আইসিসির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। এ ছাড়া সিএ চেয়ারম্যান ওয়ালি অ্যাডওয়ার্ডস নতুন নিবার্হী কমিটির প্রধান হিসেবে কাজ করবেন। ইসিবির চেয়ারম্যান জাইলস ক্লার্ক আর্থিক ও বাণিজ্যিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন। নতুন সৃষ্ট এই পদগুলোর মেয়াদ হবে ২ বছর।

অনুমোদিত রীতি অনুযায়ী সিরিজ আয়োজন নিশ্চিত হবে ২ বোর্ডের সমঝোতার ভিত্তিতে। তবে ফিউচার ট্যুর প্রোগ্রামের রীতিনীতি মেনেই সব কিছু নির্ধারিত হবে। আইসিসির সহযোগী ও সম্ভাবনাময় দেশগুলোর জন্যও টেস্ট পরিবারের সদস্য হওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। এখন থেকে সহযোগী সদস্য দেশগুলোর প্রথম শ্রেণীর প্রতিযোগিতা ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে চ্যাম্পিয়ন দেশটি টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের ১০ নাম্বার দলের সঙ্গে একটি প্লে-অফ ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবে। এই ম্যাচটি জিতলেই ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ বিজয়ী সহযোগী সদস্য দেশটির টেস্ট মর্যাদা নিশ্চিত হবে।

আগামী ২০১৭ ও ২০২১ সালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের বদলে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি অনুষ্ঠিত হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আবারও প্রতিটি আইসিসি সদস্যের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে করে আবারও আইসিসির নিজস্ব এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ, জিম্বাবুয়েসহ আইসিসির শীর্ষ সহযোগী সদস্য দেশগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হল। উল্লেখ্য, গত ২টি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ের প্রথম ৮টি দেশ খেলার সুযোগ পেয়েছিল।

আগে প্রস্তাবিত আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন থেকে প্রতিটি টেস্ট খেলুড়ে দেশই দলগত নৈপুণ্য এবং আইসিসিতে তাদের আর্থিক অবদানের ভিত্তিতেই তহবিল থেকে অনুদান পাবে। পাশাপাশি টেস্ট ক্রিকেট তহবিল থেকে আর্থিক সুবিধা পাবে ভারত, ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া বাদে বাকি ৭টি টেস্ট খেলুড়ে দেশও। পাশাপাশি টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোকে দ্রুত দ্বি-পক্ষীয় আলোচনার ভিত্তিতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত একটি পঞ্জিকা প্রস্তুত করারও তাগাদা দেওয়া হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এএস/এমএ/সিজি/সা/ফেব্রুয়ারি ৮, ২০১৪)