নির্বাচনী সহিংসতায় বিধ্বস্ত বিদ্যালয়গুলো এখনও সংস্কার হয়নি
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ও আগের রাতে নির্বাচনবিরোধীদের হামলায় লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ক্ষতিগ্রস্ত ২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনও সংস্কার করা হয়নি। ফলে ওইসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। খোলা আকাশের নিচে অনেক প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিশুদের পাঠদান চলছে।
রামগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্র জানায়, ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের দিন ও এর আগের রাতে দুর্বৃত্তদের তাণ্ডবে উপজেলার পাঁচটি মাধ্যমিক ও ১৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় নয়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হরিশ্চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নুনিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও শ্রীরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়। এর মধ্যে হরিশ্চর ও নুনিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪ ও ৫ জানুয়ারি দুই দফায় অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর করা হয়।
নুনিয়াপাড়া সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঝুমুর রানী পাল জানান, বিদ্যালয়ে ভোটকেন্দ্র হওয়ায় দুর্বৃত্তরা পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে। এতে অধিকাংশ বেঞ্চ, আসবাবপত্র, দরজা-জানালা পুড়ে যায়। বর্তমানে তারা বাধ্য হয়ে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীকে খোলা মাঠে পাঠদান করছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে এবং শীত ও রোদে তাদের কষ্ট হচ্ছে।
হরিশ্চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধু ভূষণ পাল জানান, নির্বাচনের আগের দিন বিদ্যালয়ের অফিসকক্ষে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। এতে ওই কক্ষের দরজা-জানালা, আসবাবপত্রসহ মূল্যবান কাগজপত্র পুড়ে যায়।
নয়নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোবাইল ফোনে জানান, সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে তার প্রতিষ্ঠানের। আধাপাকা ভবনটি পাঠদানের অযোগ্য হয়ে পড়ায় বাধ্য হয়ে স্কুল আঙিণায় ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। প্রতিষ্ঠানের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তারা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষতিপূরণ বা অনুদান পাওয়া যায়নি।
শ্রীরামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দিলীপ কুমার পাল জানান, নির্বাচনের দিন দুর্বৃত্তরা ভোটকেন্দ্র দখল করে অফিস ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
তিনি বলেন, ক্ষতির বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কারের জন্য একটি বরাদ্দ আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা পাওয়া যায়নি।
রামগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নবীর উদ্দিন ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কামাল হোসেন এ প্রসঙ্গে জানান, ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা করে সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। বরাদ্দ এলেই প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কারকাজে হাত দেওয়া হবে।
(দ্য রিপোর্ট/এনএম/এমএআর/এএল/ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৪)