বান্দরবান প্রতিনিধি : উপজেলা নির্বাচনী আমেজে সরগরম পার্বত্য জেলা বান্দরবান। তবে প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ক্যশৈ হ্লা এবং সম্পাদক কাজী মুজিবুর রহমান নিজেদের পছন্দমতো প্রার্থী চূড়ান্ত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যাসা প্রু মারমা। তার দাবি, সংগঠনের সিনিয়র নেতাদের অগোচরে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এদিকে নির্বাচনী তফসিল ঘোষিত চার উপজেলায় প্রার্থী মনোনীত করেছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি-জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) দুটি করে উপজেলায় প্রার্থী নিশ্চিত করেছে। তবে বিএনপি ও জনসংহতি সমিতি গোপন ঐক্যের মাধ্যমে দুটি করে উপজেলা ভাগাভাগি করে নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

বিষয়টি অস্বীকার করে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান বলেন, গোপন ঐক্যে নয়, রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায় বিএনপির শক্ত কোনো প্রার্থী নেই। ভোটের হিসাব-নিকাশ চিন্তা করে জনসংহতি সমিতির সঙ্গে এক ধরনের আলাপ-আলোচনা চলছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে কি না তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। কারচুপি না হলে জয়ের ব্যাপারে আমরা শতভাগ আশাবাদী।
জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ইসলাম বেবী জানান, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র থাকলেও নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে, তা নিয়ে আমাদের কোনো শঙ্কা নেই। যাচাই-বাছাই করে যোগ্য প্রার্থীদেরই চার উপজেলায় দলীয় প্রার্থী মনোনীত করা হয়েছে। জয়ের ব্যাপারেও আমরা আশাবাদী।
জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ক্যাসা প্রু মারমা বলেন, নিজেদের পছন্দমতো দলের শীর্ষ নেতাদের অগোচরে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। প্রার্থী কারা তাও অনেকে জানেন না। বিষয়টি নিয়ে দলের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
জেলা নির্বাচন অফিস ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, চার উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জনসংহতি সমিতির ১৩ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) ১১ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১১ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র চূড়ান্ত করা হয়েছে।
চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন, লামা উপজেলায় আওয়ামী লীগের মোহাম্মদ ইসমাঈল, বিএনপির হেডম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী, মো. আবু মুছা, সেতেরা বেগম, অইনগ্য মারমা, থানছি উপজেলায় আওয়ামী লীগের থোয়াই হ্লা মং, বিএনপির খামলাই ম্রো, অলসান ত্রিপুরা, ক্যহ্লা চিং মারমা, রুমা উপজেলায় আওয়ামী লীগের এডভোকেট বাচিং থোয়াই, জনসংহতি সমিতির (জেএসএন) অং থোয়াই চিং মারমা, রোয়াংছড়ি উপজেলায় আওয়ামী লীগের চহাই মং মারমা, জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) ক্যবা মং মারমা।
মোট ভোটার সংখ্যা- রোয়াংছড়ি উপজেলায় ১৬ হাজার ৬৪৪, রুমা উপজেলায় ১৭ হাজার ৮, থানছি উপজেলায় ১৩ হাজার ৮৪৫ ও লামা উপজেলায় ৫৮ হাজার ৪৪২।
এদিকে নির্বাচনী আমেজে সরগরম হয়ে ওঠা পাহাড়ী জেলা বান্দরবানের চায়ের দোকান থেকে শুরু করে অফিস-আদালত সবখানে চলছে আলাপ-আলোচনা। প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রার্থীরা। বসে নেই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও। চেয়ারম্যান প্রার্থীদের সঙ্গে সমানতালে দৌড়াচ্ছেন পুরুষ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও।
(দ্য রিপোর্ট/এএস/এমএটি/এএস/এনআই/ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৪)