লালবাগ কেল্লায় ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো’
বিদ্যুৎ বিভ্রাটের তদন্ত প্রতিবেদন সোমবার
কাওসার আজম, দ্য রিপোর্ট : রাজধানীর লালবাগ কেল্লায় প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে সোমবার। তদন্ত কমিটির প্রধান এএসএম মনজুরুল এহসান এ কথা জানিয়েছেন। দ্য রিপোর্টকে তিনি বলেন, ‘তদন্ত কাজ এখনও শেষ হয়নি।’
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) চেয়ারম্যান তাপস কুমার রায় ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রি. জে. (অব.) মো. নজরুল হাসানের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
গত শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ঐতিহাসিক লালবাগ কেল্লায় ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ঘটনায় ডিপিডিসির ১০ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ শো’র উদ্বোধন করেন।
ওই দিন বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডিপিডিসি’র চেয়ারম্যান তাপস কুমার রায় সাংবাদিকদের জানান, “প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কয়েক মিনিট বিদ্যুৎ বিভ্রাট হয়। এ ঘটনায় বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তাদের গাফিলতি আছে কিনা তা জানার জন্য ১০ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। যদি তদন্তে তাদের গাফিলতি প্রমাণিত হয় তবে স্থায়ী বরখাস্ত করা হবে।’
তদন্ত টিমের প্রধান এএসএম মনজুরুল এহসান রবিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘তদন্ত কাজ এখনও শেষ হয়নি, তদন্ত চলছে। আগামীকাল (সোমবার) তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।’
এ ব্যাপারে ডিপিডিসির চেয়ারম্যান তাপস কুমার রায় দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘তদন্ত টিম বিষয়টি তদন্ত করছে। দু-এক দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ার কথা। এখন পর্যন্ত (রবিবার বিকেল সাড়ে ৫টা) তদন্ত রিপোর্ট পাইনি।’ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে কি ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি অপরাধ প্রমাণের পরই ঠিক করা হবে।’ এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে তিনি ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেন।
পরে ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্রি. জে. (অব.) মো. নজরুল হাসানের সঙ্গে দ্য রিপোর্টের পক্ষে একাধিকবার ফোনে জানতে চাওয়া হয় তদন্ত রিপোর্ট জমা পড়েছে কিনা। সর্বশেষ রবিবার রাত ৭টার দিকে তিনি জানান, ‘তদন্ত রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি। তদন্ত এখনও চলছে।’ কবে নাগাদ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া আছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি তো বলেছিলাম আজকের মধ্যে দিতে। অপেক্ষা করছি, দেখা যাক। জমা হলে জানতে পারবেন।’
বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটেছিল নাকি ইচ্ছাকৃত বা দায়িত্বে অবহেলার কারণে তা তদন্তে ওইদিনই ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালক এএসএম মনজুরুল এহসানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত টিম গঠন করা হয়। ডিপিডিসির পাশাপাশি একাধিক সংস্থাও বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডিপিডিসির গঠিত তদন্ত টিমের সদস্যরা গত শনিবার লালবাগের ডিপিডিসির আঞ্চলিক কার্যালয়ে অভিযুক্তদের ডেকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠান চলাকালে ডিপিডিসির লালবাগ অঞ্চলে যারা ওই সময় দায়িত্ব পালন করছিলেন তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয় জানতে চেয়েছেন তদন্ত কমিটি ও একাধিক সংস্থা।
ডিপিসিরি বহিষ্কৃত কর্মকর্তারা হলেন- রফিকুল ইসলাম (নির্বাহী প্রকৌশলী নারিন্দা, ফজলুল করিম (নির্বাহী প্রকৌশলী গ্রিড দক্ষিণ-২), শেখ মোহাম্মদ জিয়াউল হাসান (নির্বাহী প্রকৌশলী লালবাগ), মো. মহিউল আলম (নির্বাহী প্রকৌশলী স্বামীবাগ), মোসাহেদুল হক (ডিউটি অফিসার উপ-সহকারী প্রকৌশলী নারিন্দা), আব্দুল হাকিম (অভিযোগ সুপারভাইজার নারিন্দা), লুৎফর রহমান (সুপারভাইজার স্বামীবাগ), আমির হোসেন (উপ-সহকারী প্রকৌশলী গ্রিড নারিন্দা), সাইদ আহমেদ (উপ-সহকারী প্রকৌশলী গ্রিড নারিন্দা), রকিবুল হাসান (সহকারী প্রকৌশলী ডিউটি অফিসার স্বামীবাগ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ)।
(দ্য রিপোর্ট/কেএ/জেএম/এএল/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৪)