মঞ্জুর হত্যা মামলা : ২৭ ফেব্রুয়ারি নতুন করে যুক্তিতর্ক
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : মঞ্জুর হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক নতুন করে উপস্থাপনের জন্য ২৭ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছে আদালত। সোমবার এ রায় ঘোষণার কথা ছিল।
ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ খন্দকার হাসান মাহমুদ ফিরোজ সোমবার সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে এ আদেশ দেন।
এর আগে এই মামলার মূল আসামি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সোমবার সকাল ১১টা ১৮ মিনিটে আদালতে হাজির হন।
দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে সোমবার মামলাটির রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক হোসনে আরা আক্তার। তবে ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলার নতুন বিচারক হিসেবে খন্দকার হাসান মাহমুদ ফিরোজকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
নতুন বিচারক নিয়োগ হওয়ায় মামলার রায় হবে কিনা, তা নিয়ে দ্য রিপোর্টের কাছে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আসাদুজ্জামান খান রচি।
তিনি বলেছিলেন, সাধারণত নতুন বিচারক এলে নতুন করে যুক্তিতর্ক শুরু হয়। তাই সোমবার মঞ্জুর হত্যা মামলার রায় হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হন। তখন চট্টগ্রামে অবস্থিত সেনাবাহিনীর ২৪তম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার স্টাফ (জিওসি) ছিলেন আবুল মঞ্জুর। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর আত্মগোপনে যাওয়ার পথে মঞ্জুরকে আটক করে পুলিশ। এরপর ওই বছরের ২ জুন মেজর জেনারেল মঞ্জুরকে পুলিশ হেফাজত থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন এবং মৃত্যুসনদ পেতে বিলম্ব হওয়ায় ঘটনার ১৪ বছর পর ১৯৯৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি মঞ্জুরের ভাই আইনজীবী আবুল মনসুর আহমেদ চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলাটি করেন। ১৯৯৫ সালের ২৭ জুন এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির তৎকালীন সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দ এরশাদসহ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
দীর্ঘ ১৯ বছর মামলাটি বিভিন্ন কারণে ঝুলেছিল। বিচার চলাকালে পর্যায়ক্রমে মোট ২২ জন বিচারক বিচারিক কার্যক্রমে নিয়োজিত ছিলেন। এর মধ্যে ২২ জনই বিভিন্ন কারণে বদলি হয়েছেন। ২২ জানুয়ারি মামলার ২২তম বিচারক ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হোসনে আরা আক্তার সোমবার আলোচিত মামলাটির রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
২২ জানুয়ারি ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত অস্থায়ী এজলাসে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি উপস্থাপনের মধ্য দিয়ে এ মামলার কার্যক্রম শেষ হয়। এ সময় মামলার প্রধান আসামি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং বাকি দুই আসামি মেজর (অব.) কাজী এমদাদুল হক ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
মামলার চার্জশিটভুক্ত অপর দুই আসামি মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল লতিফ ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শামসুর রহমান শমসেরের বিরুদ্ধে মামলার কার্যক্রম হাইকোর্টের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।
এ মামলায় মোট ৪৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পর ২০১২ সালের ২ অক্টোবর আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন প্রধান আসামি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। এর সমর্থনে আদালতে লিখিত বক্তব্যও দাখিল করেন তিনি।
এই হত্যাকাণ্ডের রায়ে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ভাগ্য নির্ধারিত হবে। একই সঙ্গে বহুল আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘটিত হবে।
(দ্য রিপোর্ট/জেএ/এমএআর/এজেড/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৪)