হাসিব বিন শহিদ, দ্য রিপোর্ট : বহুল সমালোচিত রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানার বাবা আব্দুল খালেকের বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার নোটিশ জারি করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ইতোপূর্বে মা-বাবাসহ রানার বিরুদ্ধে সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারির বিষয়টি কমিশন কর্তৃক অনুমোদিত হয়। দুদক সূত্র দ্য রিপোর্টকে এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

রানা এবং তার বাবা কারাগারে থাকায় তাদের জামিনে মুক্তি পাওয়া পর্যন্ত সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারি অপেক্ষার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কমিশন। এমতাবস্থায় রানার বাবা জামিনে মুক্তি পেলে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক এস এম মফিদুল ইসলাম পূর্বের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সম্পদ বিবরণী জারির সুপারিশ করেন। অনুসন্ধাকারী কর্মকর্তার সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন আব্দুল খালেক বরাবর সম্পদ বিবরণী জারির নির্দেশ দেয়।

রবিবার দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক সৈয়দ আতাউল কবিরকে আব্দুল খালেকের নামে সম্পদ বিবরণী নোটিশ জারির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেয় কমিশন। রানার মা মোসা. মর্জিনা বেগমকে ইতোমধ্যেই সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ করেছে কমিশন।

রানা বর্তমানে কারাগারে থাকায় তার বরাবর সম্পদ বিবরণী দাখিলের নোটিশ জারি করা হয়নি।

দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে রানার বিপুল পরিমাণ বিত্তের মালিক হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করা রানা বাবার আর্থিক অস্বচ্ছলতার ও উশৃঙ্খলার কারণে স্কুলের গন্ডি পার হবার আগেই রাজনীতির আড়ালে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও ভূমি দখল এবং তা পরবর্তী সময়ে শিল্পপতিদের কাছে বিক্রি করে স্বল্প সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক হয় রানা। যা দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

দুদক সূত্র জানায়, রানার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মধ্যে সাভার বাস স্ট্যান্ডে ৫০ শতাংশ জমির ওপর নির্মিত নয় তলা বাণিজ্যিক ভবন যা ২০১৩ সালের ২৪ মার্চ নির্মাণ ত্রুটির জন্য ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। সাভার বাজার রোড বি-৭১/১ এ তার আট তলা ভবন রয়েছে। যার প্রতি ফ্লোর চার হাজার বর্গফুট। সাভার বাজার রোড আবাসিক এলাকায় রানা ও আব্দুল খালেকের পাঁচ তলা ভবন রয়েছে। যার দ্বিতীয় তলায় তারা বসবাস করেন। বাকিগুলো ভাড়া দেওয়া আছে। মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর থানার জয়মন্ডপ গ্রামের বড়িতে একটি দুই তলা ভবন রয়েছে। যা বর্তমানে ভাড়া দেওয়া আছে। রানা ব্রিক ফিল্ড এবং ও এম কে ব্রিক নামে তার দুটি ব্রিক ফিল্ড রয়েছে।

সাভার পৌর এলাকায় এবং পৌর এলাকার বাইরে রানা ও রানার মা-বাবার নামে প্রচুর সম্পদ রয়েছে। ট্রাক, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস রয়েছে। সাভারে তাদের নামে এক্সিম ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ডাচ বাংলা ব্যাংক ও ব্র্যাক ব্যাংকে পাঁচটি ঋণ হিসাবসহ মোট ২৩টি ব্যাংক হিসাব রয়েছে। এর মধ্যে রানার নামে ৩৫ লাখ টাকার এফডিআর রয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এইচবিএস/এমএআর/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৪)