দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলাকারী ও সন্ত্রাসী অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানিয়েছে নাগরিক ঐক্য, গণফোরাম, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সোমবার দুপুরে এই চার রাজনৈতিক দলের এক যৌথ মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ এ দাবি করেন।

বক্তারা বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলাকারী ও সন্ত্রাসী অস্ত্রধারীদের গ্রেফতার করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। আমরা সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গণ চাই। এ সময় বক্তারা শিক্ষাঙ্গণকে বাণিজ্যিকীকরণ না করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানান।

বাসদ’র সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেন, এর আগে সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাবি শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলন করেছে। তখন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন বলেছিল, ৪৫০ জন শিক্ষকের অনুমোদন থাকলেও রাজনৈতিক প্রভাবে ২২০০ জন শিক্ষক নেওয়া হয়েছে। তাদের বেতন আমরা কীভাবে দেব?

শিক্ষকদের বেতন দিতে না পেরে শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত ফি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত ফি চাপিয়ে দেওয়ার নমুনা হিসেবে এক লাখ টাকায় সান্ধ্যকালীন কোর্সে ভর্তি শুরু করেছে রাবি কর্তৃপক্ষ বলেও মন্তব্য করেন এই প্রবীণ নেতা।

খালেকুজ্জামান আরও বলেন, রাবিতে সহিংস ঘটনায় যারা জড়িত তাদের বহিষ্কার ও গ্রেফতার করতে হবে। ঘটনার পরবর্তীতে সকল দোষ শিবিরের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে। ছাত্রলীগ, ছাত্রদল ও ছাত্র শিবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো আন্দোলন করে না। ঐদিন আন্দোলনের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছিল। যাদের মধ্যে অনেক ছাত্রীরাও ছিল। ছাত্রীরা তো শিবির করে না। সেখানে শিবিরের কোনো স্লোগানও দিতে দেখা যায়নি। কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ও ডাকসু’র সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ছাত্রলীগের সকল সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড তারা শিবিরের নাম দিয়ে চালিয়ে দেয়। আগে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঠিক হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে তিনি বলেন- প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, গণতন্ত্রের থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বড়। কিন্তু গণতন্ত্রের জন্যই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। ক্ষমতার প্রশ্ন সব রাজনীতিতেই আছে। কিন্তু নীতির প্রশ্ন তার থেকে বড়। যা বড় দুই দলের মধ্যে নেই। এই দুই দল বাংলার জনগণকে মুক্তির পথে পরিচালিত করতে পারছে না। তাই এদের মধ্যে কাউকে বাছাই না করে, নতুন করে সংঘটিত হওয়ার জন্য সকলকে আহ্বান জানান তিনি।

শিক্ষা ক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে শিক্ষামন্ত্রীর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে বাসদ নেতা বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, শিক্ষা কোনো বাণিজ্যিক পণ্য নয়। শিক্ষা ক্ষেত্রে ভর্তুকি নয়, আরও বেশি বিনিয়োগ চাই। কারণ এই ক্ষেত্রে যতবেশি বিনিয়োগ হবে, দেশের তত বেশি উন্নয়ন হবে।

গণফোরামের নেতা মোস্তাক আহমেদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন অ্যাডভোকেট আ ফ ম শফিকুল্লাহ, সিপিবি নেতা সৈয়দ আবু জাফর, নাগরিক ঐক্যের আবু বকর সিদ্দিকী, রাকসু’র সাবেক ভিপি রাগিব হাসান মুন্না, সিপিবি’র রুহিন হোসেন প্রিন্স প্রমুখ।

(দ্য রিপোর্ট/এসআর/এপি/আরকে/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৪)