রবিউল ইসলাম, চট্টগ্রাম থেকে : আগের দিনই মুখে তালা লাগিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। কোনো কথা বলেননি সংবাদকর্মীদের সঙ্গে। সোমবারও তাই। অনুশীলনে আসলেও চোখে চোখ পড়তে হেসেই আলবিদা! পাক্কা ৪৮ ঘণ্টা এমন কঠিন বিধি-নিষেধের মুখে রয়েছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। এমন অভিনব ঘটনা আগে দেখা যায়নি। নিদেনপক্ষে কেউ একজন কথা বলেছেন। জাতীয় দলের প্রধান কোচ শেন জার্গেনসনের দেওয়া বিধি-নিষেধ কড়াকড়িভাবেই পালন করছেন ক্রিকেটাররা। এমনকি জাতীয় দলের টিম ম্যানেজার এম এ আউয়াল চৌধুরী চেষ্টা করেও হেরে গেছেন জার্গেনসনের কাছে। দায়িত্ব নিয়েও পারেননি তিনি ক্রিকেটারদের কথা বলাতে।

একটু বিস্ময়কর ঘটনা হলেও কোচ চাইছেন যেভাবে এই মুহূর্তে টোয়েন্টি২০ আগে সব চলছে সেভাবে। কথা নয়; কাজে মনোযোগ দিতেই এমন বিধি-নিষেধ জার্গেনসনের।

কাউকেই মিডিয়ার সামনে হাজির হতে দেওয়া হয়নি; বিষয়টি অবশ্য মিডিয়ার জন্য বাড়াবাড়ির সামিল। এই নিয়ে চলছে হইচইও। কথা না বললে লেখার অনেক কিছুই থাকে না। তা ছাড়া দলের এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি; যাতে দলকে এভাবে আড়ালে রাখতে হবে। এক পযায়ে সংবাদকর্মীদের দলের ম্যানেজার ও বিসিবির বোর্ড পরিচালক এম এ আউয়াল চৌধুরী দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘ব্রিফের ব্যবস্থা করা হবে।’ কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয়নি। টোয়েন্টি২০ দল সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘নতুন যে খেলোয়াড় রিপ্লেসমেন্ট করা হয়েছে সবাই ভালো ক্রিকেটার। আশা করি, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আমাদের দল ভালো ফাইট দিতে পারবে। শ্রীলঙ্কা টোয়েন্টি২০-তে র‌্যাঙ্কিংয়ে এক নাম্বারে অবস্থান করছে। খেলোয়াড়রা খুব উত্তেজিত; ওদের যদি আমরা বিট করতে পারি আমাদের জন্যই ভালো। আমাদের একটা পজিশন ভালো জায়গায় আসবে। সবাই ফিট আছে।’

তামিম ইকবাল হঠাৎ করে সহ-অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছেন এ ইস্যুতে দলের অবস্থান কেমন এমন প্রশ্নের জবাবে ম্যানেজার বলেছেন, ‘আমি বিষয়টি সঠিক জানি না তামিম কী বলেছে। তবে ড্রেসিং রুমের অবস্থা ভালো। কোনো রকম সমস্যা নেই। খেলোয়াড়রা ভালো আছে। এ বিষয়ে আমার কোনো কমেন্ট নেই।’

দলে কোনো সমস্যা নেই; পরিবেশও ভালো। পরিবেশ ভালো থাকা অবস্থায় খেলোয়াড়দের মিডিয়া কথা বলতে নিষেধ। সম্পূরক এক প্রশ্নের জবাবে এম এ আউয়াল বলেছেন, ‘কোচ একটু ধৈর্য ধরতে বলেছেন। ওরা টেস্ট সিরিজ নিয়ে গেছে। আমরা টোয়েন্টি২০ সিরিজে ম্যাচগুলো জিততে চাই।’ কোচ এ জন্যেই বলেছেন, ‘আপাতত নয়; অনুশীলন হওয়ার পরে খেলোয়াড়রা সবাই কথা বলবে। সবাই যেন অনুশীলনে মনোযোগ দিতে পারে বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্যই এ ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

অন্য কোনো বিষয় এর সঙ্গে নেই। কোচ চাচ্ছেন মনোযোগ অনুশীলনের দিকেই যেন থাকে খেলোয়াড়দের। তামিম রবিবার অনুশীলনের সময় ঘাড়ে সামান্য ব্যথা পেয়েছেন। তামিমের ইনজুরির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ব্যাখ্যা ম্যানেজার বলেছেন, ‘তামিমের ইনজুরি খুব একটা বেশি নয়। ফিজিও চেক করেছে। আশা করি, ম্যাচের আগেই সেরে ওঠবে।’

বিসিবি সভাপতি আইসিসির সভা শেষে রবিবার দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরে তামিমের সহ-অধিনায়কের পদ ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেছিলেন, বিষয়টি আমি এখনও জানি না, তবে ফোনে তামিমের সঙ্গে কথা বলব। এ বিষয়ে এম এ আউয়াল চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, ‘ফোনের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।’

(দ্য রিপোর্ট/আরআই/এএস/সিজি/সা/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৪)