দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : স্বামী হত্যার অভিযোগে ইব্রাহীম কুট্টির স্ত্রী মমতাজ বেগমের মামলায় সাঈদীর নাম নেই বলে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনকালে আদালতকে জানিয়েছেন আইনজীবী এস এম শাহজাহান।

মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে সোমবার অষ্টম অভিযোগে আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষ হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ শুনানি শেষে মঙ্গলবার পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এমকে রহমান এবং আসামিপক্ষে অন্যান্যের মধ্যে ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ আল আমিন উপস্থিত ছিলেন।

যুক্তি উপস্থাপনকালে সাঈদীরপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান বলেন, ‘ইব্রাহীম কুট্টি হত্যা বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের চতুর্থ, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম সাক্ষী ভিন্ন ভিন্ন সাক্ষ্য দিয়েছেন।’

তিনি বলেন, ‘শুধু তাই নয় রাষ্ট্রপক্ষের একটি ডকুমেন্টেও হত্যার ঘটনাস্থল সম্পর্কে ভিন্ন রকম তথ্য রয়েছে। এ ডকুমেন্ট জমা দিয়েছিলেন ১নং সাক্ষী ও মামলার বাদী মাহবুবুল আলম হাওলাদার।’

শাহজাহান বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে, রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী ও ডকুমেন্টে ইব্রাহীম কুট্টি হত্যা বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন স্থান উল্লেখ আছে। আর রাষ্ট্রপক্ষ যখন ঘটনাস্থল থেকে সরে গেছেন, তখন আসলে তারা মামলা থেকেই সরে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘ইব্রাহীম কুট্টি হত্যা বিষয়ে তার স্ত্রী মমতাজ বেগম ১৯৭২ সালের ৮ মার্চ পিরোজপুর এসডিও বরাবর একটি মামলা করেন। পরে ১৬ জুলাই এ মামলাটি থানায় এজাহার হিসেবে পাঠানো হয়।’

আইনজীবী বলেন, ‘মামলার এজাহারে মমতাজ বেগম উল্লেখ করেন তার স্বামী ইব্রাহীম কুট্টি তার (মমতাজ) বাপের বাড়ি নলবুনিয়া থাকা অবস্থায় শান্তি কমিটির লোকজন ও পাকিস্তানী আর্মি তাকে গুলি করে হত্যা করে। ঘটনাটি ঘটে ১৯৭১ সালের ১ অক্টোবর। মমতাজ বেগম সে মামলায় মোট ১৩ জনকে আসামি করেছেন এবং সে আসামির তালিকায় মাওলানা সাঈদীর নাম নেই।’

তিনি এ সময় আদালতে এ মামলার নথি দাখিল করেন। এ মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে শাহজাহান তাদের নাম পড়ে শোনান।

মামলার বিবরণ পড়া শেষে অ্যাডভোকেট শাহজাহান বলেন, ‘রাষ্ট্রপক্ষের দাবি ১৯৭১ সালে ৮ মে ইব্রাহীমকে পাড়েরহাট বাজারে হত্যা করা হয়েছে। আর ১৯৭২ সালের মার্চে মমতাজ বেগম তার আবেদনে উল্লেখ করেছেন তিনি তখন গর্ভবতী। ১৯৭১ সালের ৮ মে পাড়েরহাট ইব্রাহীম নিহত হলে ১৯৭২ সালের মার্চ মাসে তার গর্ভবতী থাকার কথা নয়। এ থেকেও প্রমাণিত যে, ইব্রাহীম কুট্টি ১৯৭১ সালে ৮ মে পাড়েরহাট নিহত হননি। তাকে ১৯৭১ সালের ১ অক্টোবর তার শ্বশুরবাড়ি নলবুনিয়া থাকা অবস্থায়ই হত্যা করা হয়। এর সঙ্গে মাওলানা সাঈদী কোনো অবস্থাতেই জড়িত নন। থাকলে অন্তত মমতাজ বেগমের মামলায় আসামি হিসেবে তার নাম থাকত।’

শাহজাহান বলেন, ‘মাওলানা সাঈদীর পক্ষে ১৭তম সাক্ষী ভাগিরথীর ছেলে গণেশ চন্দ্র সাহা তার সাক্ষ্যে ইব্রাহীম কুট্টি হত্যার অভিযোগ বিষয়ে একটি কথাও বলেননি। কিন্তু তারপরও এ অভিযোগ প্রমাণের ক্ষেত্রে ট্রাইব্যুনাল তার রায়ে অন্যান্য সাক্ষীর সঙ্গে গনেশ চন্দ্রের ওপর নির্ভর করেছে।’

(দ্য রিপোর্ট/এসএ/এসকে/সা/ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৪)